Sabtu, 30 November 2013

সতীত্বঃ আশীর্বাদ না অভিশাপ?

Sexy Hot Photos: সতীত্বঃ আশীর্বাদ না অভিশাপ?.
সতীত্ব, বিভিন্ন দেশ এবং ধর্মে খুব স্পর্শকাতর একটি বিষয়। আর আমাদের এই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে মূলত সতীত্ব বা ভার্জিনিটির ব্যাপারটা মেয়েদের ক্ষেত্রেই বেশী দেখা হয়। তবে ছেলে হোক আর মেয়ে হোক, উদার বা রক্ষণশীল মনোভাবের মানুষ হোক, নিজের সতীত্ব নিয়ে মানুষের কিছুটা চিন্তা বা দুশ্চিন্তা থাকেই। কোনও সম্পর্কে জড়ানোর সময়ে অথবা বিয়ের আগে এই ব্যাপারে মনটা বেশী খচখচ করতে থাকে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মাঝে একই রকমের চিন্তাভাবনা দেখা যায়। 


মানসী, ২৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে যার কিছুদিন পরেই বিয়ে। স্বভাবতই মাথায় চলছে হাজারো রকমের মিশ্র চিন্তা। একদিকে যেমন বিবাহিত জীবন শুরু করার জন্য যে উন্মুখ, তেমনি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত নিজের সতীত্ব নিয়ে। হবু স্বামী যদি জানতে পারে যে সে সতী নয়, তবে তার মনোভাব কেমন হবে? সে নিজেই যদি তাকে বলে দেয় তাহলে কি ব্যাপারটা ভালো হবে? নাকি তার উচিত এই ব্যাপারটা চেপে যাওয়া? ব্যাপারটা লুকানোর কোনও পথ আছে কী?

এসব দুশ্চিন্তার ক্ষেত্রে মানসির সঙ্গী আরও হাজারো নারী। যদিও তাদের অভিজ্ঞতা একেক ক্ষেত্রে একেক রকম।

দিল্লীর এক সাংবাদিক, কল্পনা শর্মা নিজের বর্তমান প্রেমিকের সাথে খোলাখুলিভাবে আলোচনা করেন এ ব্যাপারটা নিয়ে। এর পরে অবনতি তো দূরের কথা, বরং উন্নতি ঘটে তাদের সম্পর্কে। “আমার প্রেমিক নিজেও ভার্জিন ছিলো না এবং সে এ ব্যাপারে আমাকে জানিয়ে দেয় সম্পর্কের প্রথম পর্যায়েই। এ থেকে আমি সাহস পাই তার সাথে আমার নিজের অতীত সম্পর্কে কথা বলতে। আর এ ব্যাপারে তার কোনও সমস্যা ছিলো না। আমি মনে করি, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমার অতীত তোমার বর্তমানকে ক্ষতিগ্রস্ত না করছে ততক্ষন এতে কোনও সমস্যা নেই।”

২৬ বছর বয়সী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট রাহুল রাস্তোগি মনে করেন, নিজের ভার্জিনিটির ব্যাপারে নিজের সঙ্গীকে জানানোর সিদ্ধান্তটি একজন মানুষের একান্তই নিজস্ব একটি ব্যাপার এবং তার এই সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করা উচিত। “আমি যদি বিবাহিত জীবনের শুরুতে আবিষ্কার করি আমার সঙ্গী ভার্জিন নয় তাহলে আমি তাকে ভালোভাবেই নেব, কারণ আমাদের দুজনের মাঝে অন্তত একজন বেশ অভিজ্ঞ হবে। ”

উজ্জ্বল শর্মা এ ব্যাপারে সামাজিক চলের দিকে দৃষ্টি দিতে বলেন। “এখনকার সময়টাই এমন, যে আমি আশা করি না আমার সঙ্গীর সতীত্ব অটুট থাকবে, কারণ প্রেম ছাড়াও সতীত্ব হারানোটাই এখন একটা ট্রেন্ড।”

নিজের অতীতকে ভুলে গিয়ে ফ্রেশ একটা ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাটাই এখন মূলমন্ত্র হয়ে উঠছে অনেক আধুনিক দম্পতির কাছে। প্রেমিক-প্রেমিকারা মানসিকভাবে যথেষ্ট পরিপক্ক, অতীত নিয়ে টানাটানি করে তারা ভবিষ্যতকে নষ্ট করতে চায় না। “নিজের সঙ্গীর সাথে কেউ যখন নতুন জীবনের যাত্রা শুরু করে, তখন বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়েই চিন্তা করা উচিত,” বলেন আরশি উপল। “ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আপনার ওপরে। আমি নিজের স্ত্রীকে তার অতীত কর্মের জন্য ছেড়ে যাবো না, কিন্তু আমি এটা নিশ্চিত করবো যে সে আমার সাথে সারাজীবন বিশ্বস্ত থাকবে,” বলেন দিল্লীর ট্যাটু আরটিস্ট লোকেশ ভার্মা।

মনের সম্পর্কের সাথে সাথে শারীরিক সম্পর্কের ঝোঁকটাও চলে আসে, আর এখন সময়টাই এমন যে এই ইচ্ছাপূরণের বাসনা মানুষ দমিয়ে রাখার চেষ্টাও করে না। আর আধুনিক মানুষ নিজের সঙ্গীর পূর্ববর্তী প্রেম নিয়েও ঝগড়াঝাঁটিতে যেতে চায় না। কিন্তু এ সময়েও অনেক মানুষ আছে যারা ভালোবাসা এবং দাম্পত্যে কমিটমেন্টের চাইতে বড় করে দেখেন সঙ্গীর সতীত্বকে এবং তার জন্য সম্পর্কে চিড় ধরে যাবার আশঙ্কা দেখা দেয়। কিন্তু সতীত্বের চাইতে কি আপনার সঙ্গীকে একজন মানুষ হিসেবে গ্রহণ করাটা বড় করা নয়? বিবাহিত জীবনকে গ্রহণ করুন একটা নতুন যাত্রা হিসেবে আর সঙ্গীর অতীতের চাইতে আপনার সাথে তার ভবিষ্যতকেই গুরুত্ব দিন। 

টাইমস অফ ইনডিয়া হতে অনূদিত

Related Posts: সতীত্বঃ আশীর্বাদ না অভিশাপ?

Tidak ada komentar: সতীত্বঃ আশীর্বাদ না অভিশাপ?

Popular Posts
Blog Archive