নাটোরের গুরুদাসপুরে স্কুলছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক অঅক্কাস আলীকে ঝাঁড়ুপেটা করেছেন ওই স্কুলের ছাত্রীদের অভিভাবকরা। আহত ওই শিক্ষক বর্তমানে নাটোর সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিতে এলে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের কবলে পড়ে আহত হন ওই শিক্ষক।
অভিযোগ রয়েছে, আক্কাস আলী বিভিন্ন কৌশলে একাধিকবার স্কুলের কোমলমতি ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।
এর আগে অভিভাবকরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করে কোনো প্রতিকার পাননি।
সূত্র জানায়, গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারখালি পূর্বপাড়া রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাস আলী ছাত্রীদের সমাপনী পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করিয়ে দেয়ার কথা বলে স্কুল ছুটি হওয়ার পর ওই স্কুলের একটি কক্ষে প্রাইভেট পড়ান।
গত এপ্রিলে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ছুটি না দিয়ে অন্যদের বাড়ি চলে যেতে বলেন। কেউ না থাকার সুযোগে আক্কাস আলী ওই শিশুর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রীটি চিৎকার করলে শিক্ষক তাকে ভয় দেখিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলেন।
একইভাবে মে মাসেও প্রধান শিক্ষক পৃথক দিনে আরো পাঁচ ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ ঘটনার পর ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের কাছে পড়তে অনাগ্রহ দেখালে অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পারেন।
গত ২ জুন অভিভাবকরা বিষয়টি স্কুলের সভাপতি জাবেদ আলীকে অবহিত করে এর বিচার চাইলে তিনি বিচারের আশ্বাস দিয়ে সময়ক্ষেপণ করেন বলে অভিভাবকরা জানান।
এদিকে, এসব ঘটনা জানাজানির পর থেকে অন্যান্য ছাত্রীরাও স্কুলে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সচেতন অভিভাবকরা সভাপতির কাছে বিচার না পেয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
স্কুলে অধ্যয়নরত ঘটনার শিকার একাধিক ছাত্রীর বাবা জানান, শিক্ষকের এমন আচরণে তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে ভীষণভাবে শঙ্কিত। এসব ঘটনায় অভিভাবকরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এর ফলে অনেকেই মেয়েদের প্রাইভেট পড়ানো ও স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেন।
এ ঘটনার পর অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে স্কুলে আসা বাদ দেন প্রধান শিক্ষক আক্কাস আলী।
প্রায় তিন মাস পর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের অজুহাতে কৌশলে হঠাৎ তিনি স্কুলে আসেন। খবর পেয়ে এলাকার শ’ শ’ বিক্ষুব্ধ অভিভাবক স্কুলে আসতে থাকেন। অভিভাবকদের আসার খবর পেয়ে তিনি পালানোর সময় কয়েকজন অভিভাবক তাকে ঝাঁড়ুপেটা করেন।
পরে তাকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাতপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্কুল কমিটির সভাপতি জাবেদ আলী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের দেয়া অভিযোগ সত্য বলে স্বীকার করেন।
শ্লীলতাহানির বিষয়টি চেপে গিয়ে ওই শিক্ষকের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, শোক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী দলের সদস্যরা তাকে মারপিট করেছে।
তার কাছ থেকে মোটরসাইকেল, গলায় থাকা চেইন ও পকেট থেকে কয়েক হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
Tidak ada komentar: ছাত্রীর শ্লীলতাহানির দায়ে নাটোরে প্রধান শিক্ষককে ঝাঁড়ুপেটা
Posting Komentar