নারীরা কি সবসময়েই নারীদের বন্ধু? নাকি এই আধুনিক যুগেও নারীরাই অবমাননা করছে নারীদের? একটি গবেষণায় দেখা যায় অধিকাংশ নারীই একে অপরের নামে পরচর্চা করে থাকেন, তা সে কর্মক্ষেত্র বা স্কুল-কলেজে যেখানেই হোক না কেন। এমনকি কোথাও বেড়াতে গেলেও নারীদের পরচর্চা থেমে থাকে না। এ যেন নারীদের নিজেদের ভেতরের একধরণের প্রতিযোগিতা। একজন অপরজনকে কিভাবে নিচে নামানো যায়, কি করে হেয় প্রতিপন্ন করা যায় তা নিয়ে তারা চিন্তিত। অনেক ভালো এবং গভীর সম্পর্কও ভেঙে ফেলতে পারে এই পরচর্চা। কিন্তু এ নিয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই কারো। নিজের মতো করে কথা বানিয়ে, বাজে মন্তব্য করে, অপরকে ছোট করার কাজে মত্ত সবাই। একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত প্রায় পুরো নারী জাতি।
তাহলে কি এটা বলাটা খুব ভুল হবে যে পরিহিত পোশাক দিয়ে একজনকে বিচার করে অনায়েসেই তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা, একজন অপরজনকে শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবাপন্ন নারীরা আসলেই ভয়ানক প্রজাতি? কিন্তু আধুনিক সময়ে এ ধরণের মনোভাব কি আসলেই নারীদের শোভা পায়? তাহলে বলতে হবে এই আধুনিক যুগেও নারীরা এখনও নিজেদের চিন্তা ভাবনাকে পুরোপুরি আধুনিক করতে পারেনি!
সম্প্রতি ম্যাক-ম্যাস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষকরা তাদের গবেষণায় নারী জাতিকে "ভয়ানক" প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে নারীরা একজন অপরজন সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করার একটি সুযোগও ফেলতে চান না। গবেষণার জন্য তারা দুজন ছাত্রীকে তাদের ল্যাবরেটরীতে ডেকে নিয়ে বসতে বলেন। তাদের পরীক্ষা শুরু হয় যখন তৃতীয় একজন ছাত্রী আসেন। প্রথমে তৃতীয় ছাত্রীটি একটি সাধারণ টি-শার্ট ও জিন্স পরিধান করে আসেন। তখন প্রথম ছাত্রী দুজন তৃতীয় ছাত্রীর দিকে সামান্য নজর দিয়ে নিজেদের মধ্যে গল্পে মগ্ন থাকেন। পরবর্তীতে তৃতীয় ছাত্রীটিই যখন সেজেগুজে একটি লো-কাট টপস ও শর্ট স্কারট পরিহিতাবস্থায় আসেন তখন তারা নিজেরদের গল্প থামিয়ে অনেকক্ষণ তার দিকে রাগত চোখে তাকিয়ে থাকে। এবং তৃতীয় জন চলে যাওয়ার পর তাকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাজে মন্তব্য করতে থাকেন। ব্যাপারটা ঠিক এরকম যে তারা দুজন তৃতীয় জনকে তার সাজগোজ ও পোশাকের জন্য নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে নিলেন এক মুহূর্তেই। স্বভাবতই প্রায় সকল নারী পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনেক কিছু করে থাকেন। যখন তারা দেখেন অপর একজন নারী তার থেকে বেশি আকর্ষণীয় তখন তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে নিয়ে তাকে কি করে হেয় করা যায় তা চিন্তা করতে থাকেন ফলশ্রুতিতে বাজে মন্তব্য করেন।
এই ধরণের ঘটনা প্রায় সব জায়গাতেই ঘটে থাকে। স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও কর্মক্ষেত্রে পোশাকআশাক ও সাজগোজের ভিত্তিতে নারীরা নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচন করেন। সকলেই পত্রিকায় বা ম্যাগাজিনে ফ্যাশনেবল পোশাক পরিহিতা মডেল দেখতে অভ্যস্ত হলেও নিজের পাশে ওই একই ধরণের পোশাক পরিহিতা নারী দেখে ভ্রু কুঁচকে ফেলেন এবং বাজে মন্তব্য করতে পিছপা হন না তাকে না জেনেই।
তাহলে কি এটা বলাটা খুব ভুল হবে যে পরিহিত পোশাক দিয়ে একজনকে বিচার করে অনায়েসেই তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা, একজন অপরজনকে শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবাপন্ন নারীরা আসলেই ভয়ানক প্রজাতি? কিন্তু আধুনিক সময়ে এ ধরণের মনোভাব কি আসলেই নারীদের শোভা পায়? তাহলে বলতে হবে এই আধুনিক যুগেও নারীরা এখনও নিজেদের চিন্তা ভাবনাকে পুরোপুরি আধুনিক করতে পারেনি!
Tidak ada komentar: যুগের সাথে কি বদলেছে নারীর পরচর্চার মানসিকতা?
Posting Komentar