পুরুষেরা কি ভয় পায় বিয়ে করতে? এমন প্রশ্ন হয়তো অনেকের মনেই জাগতে পারে! কৈশোরে কিংবা তারুণ্যে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় হয়তো অনেকেই বিয়ের ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন। অথবা বেশ আক্ষেপ করেও বলেন যে, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাবা মা বিয়ে দিচ্ছে না কিংবা তার মনের ইচ্ছা বুঝতে চাইছে না। কিন্তু যখন সত্যিকার জীবনে বিয়ের বয়স হয়, তখন অনেক ক্ষেত্রেই বিয়ের প্রতি দেখা দেয় অনীহা। শুধু তাই নয়, দেখা যায় যে অনেক দিনের প্রেম থাকা সত্ত্বেও সম্পর্ককে বিয়ের নাম দিতে ভয় পাচ্ছেন তারা।
বিয়ে নিয়ে বিভিন্ন রকম ভয় সৃষ্টি হয়ে আছে পুরুষ মনে। বিয়ের জন্য যেন নিজেকে কোনো ভাবেই মানসিক ভাবে প্রস্তুত করে উঠতে পারেন না তারা। ব্যাপারটা শুনতে মজার মনে হলেও আসলে মোটেই মজার নয়। বিয়ে সম্পর্কে কিছু অকারণ ভীতির কারণে অনেক পুরুষেরই জীবন একটা পর্যায়ে এসে থমকে গেছে। কিংবা ভালোবাসার মেয়েটির সাথে সম্পর্ক এগুচ্ছে না সামনের দিকে। আসুন, জেনে নেই সেই কারণ গুলো।
এক নারীতে তুষ্ট হতে না পারা
আজকাল এমন অনেক পুরুষই আছেন, যাদের কাছে বিয়ে মানে হচ্ছে কেবলই একজন নারীর সাথে সারা জীবন কাটিয়ে দেয়া, সংসার বা জীবনে থিতু হওয়া তাদের জন্য জরুরী নয়। এবং এই ব্যাপারটি তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না। এ ধরনের পুরুষেরা বহুগামী ও একজন নারীকে ভালোবেসে তার সাথে সংসার যাপন তাদের জন্য অসম্ভব একটি ব্যাপার। এরা মনে করেন বিয়ে মানেই তার বহুগামী জীবনের সকল আনন্দে একটা ছন্দপতন চলে আসবে। ফলে বিয়েকে রীতিমত আতংকের দৃষ্টিতে দেখেন তারা।
স্বাধীনতা হারানো
পুরুষদের মধ্যে একটি সাধারণ ধারণা হলো বিয়ে করা মানেই ব্যক্তি স্বাধীনতা হারানো। নিজের জন্য আলাদা ভাবে সময় দেয়া, যখন যেখানে খুশি যাওয়া, যা ইচ্ছে করা ইত্যাদি স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে পুরুষরা বিয়ে করতে পিছু হটেন।
বাড়তি দায়িত্ব নেয়া
বিয়ে করা মানেই আরেকটি মানুষদের দায়িত্ব নেয়া। স্ত্রীর দেখাশোনা, খরচ, সঙ্গ দেয়া, সুবিধা অসুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখা ইত্যাদি দায়িত্ব নিতে হয় পুরুষকে। আর বিয়ের কিছুদিন পরেই সংসারে আসে নতুন অতিথি। তখন দায়িত্ব আরো বাড়ে। সেই সঙ্গে খরচ এবং চিন্তাও বাড়ে। তাই এক সাথে এতো দায়িত্ব নিতে স্বাভাবিক ভাবেই পুরুষরা ভয় পায় এবং বিয়ের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়।
বিয়ের খরচ
ইদানিং সময়ে বিয়ে মানেই অনেক বেশি চাকচিক্য ও বড় পরিসরের অনুষ্ঠানিকতা। দামী কাপড়, প্রচুর স্বর্ণালংকার, অনেক অতিথি, লাখ টাকা দিয়ে হল ভাড়া নেয়া, হানিমুনে দেশের বাইরে যাওয়া ইত্যাদি ছাড়া যেন সমাজে মুখ রাখাই দায় হয়ে গিয়েছে। আর সেই সঙ্গে আছে দামী ওয়েডিং ফটোগ্রাফারকে দিয়ে ছবি তুলিয়ে ফেসবুকে ছবি আপলোডের প্রতিযোগীতা। এতো এতো খরচ সামলাতে গিয়ে যে কোনো পুরুষকেই হিমসিম খেতে হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে স্বল্প বেতনের চাকরী করে এতো খরচ সামলানো অসম্ভব একটি ব্যাপার। আর তাই বিয়ের প্রতি ভয় ও অনীহা জন্মে যায়।
মা-বউয়ের ঝামেলা
বিয়ে করে ঘরে বউ নিয়ে এলে অনেক পরিবারেই নানান রকম ঝামেলা দেখা যায়। কখনো বউ অন্যায় আচরণ করে, আবার কখনো নিজের মা বউয়ের প্রতি অন্যায় আচরণ করে। এই নিয়ে সংসারে শুরু হয় নানান রকম অশান্তি। তার উপর পরিবারের অন্য সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের সাথে নানান রকম মনোমালিন্য তো হয়েই থাকে অহরহ। আর এসব সমস্যার সমাধান করার দায়িত্বটা এসে পড়ে পুরুষটির ঘাড়েই। তাই এতো ঝামেলার কথা চিন্তা করেও বিয়ে নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকেই।
স্ত্রীর প্রতারনার ভয়
যেসব পুরুষরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে কাউকে প্রতারিত হতে দেখেছে কিংবা নিজে প্রেমের সম্পর্কে প্রতারিত হয়েছে তারা বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। বরং তাদের মনে বিয়ে সম্পর্কে এক অজানা ভয় সৃষ্টি হয়। তারা মনে করেন বিয়ের পর স্ত্রী প্রতারণা করবে আর এই ভয়েই বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
বন্ধু হারানো
দিন ভর বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, রাত করে ঘরে ফেরা এই তো জীবন! কিন্তু বিয়ের পর জীবনটা কি এমন থাকে? আবার এমনও দেখা যায় যে এক বন্ধু বিয়ে করে সংসার পাতল কি পাতল না, অন্য বন্ধুরা তাকে একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা শুরু করে দেয়। অনেক বন্ধু মহলে বিবাহিত বন্ধুকে নিয়ে নানান রকম হাসি ঠাট্টাও হয় যা অনেকেই সহজ ভাবে নিতে পারেন না। সবমিলিয়ে বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অনেকেই।
Tidak ada komentar: যে ৭টি কারণে পুরুষেরা "ভয়" পান বিয়ে!
Posting Komentar