সম্পর্কের সফলতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দু পক্ষের সম্মতি, আপোষের মনোভাব, সহানুভূতি ইত্যাদি ব্যাপারের ওপর নির্ভরশীল থাকে। আরও থাকে একজন আরেকজনের ওপর বিশ্বাস, ভরসা ও আস্থার পরিমাণকে ঘিরে। তবে যত যাই হোক না কেন, প্রেম কিংবা ভালোবাসা যখন জীবনে আছে তখন ভাঙন বা সম্পর্কচ্ছেদ বস্তুটাও আছে। কেউই চান না তার ভালোবাসার সম্পর্ক বা সংসারটি ভেঙে যাক। কিন্তু তবুও ভালোবাসা ভাঙে আর তখন সবচাইতে বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন সেই মানুষটি, যার এই সম্পর্কে বেশি নির্ভরশীলতা ছিল।
যদি একটি সম্পর্কে এক জনের তরফ হতে আবেগের পরিমানটা বেশি থাকে, তবে স্বভাবতই সম্পর্কচ্ছেদের পরে তার কষ্টও অনেক বেশি হয়। নির্ভরশীলতা বেশি থাকার পর হঠাৎ করে অবলম্বন হারিয়ে ফেলে অনেকে এই সময় ভুল পথে পা বাড়ান। আবার অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ভালোবাসার মানুষটির ওপরে বেশি নির্ভরশীলতা হয়ে যায় সম্পর্ক ভাঙার কারণও! আজকাল অনেকেই স্বনির্ভর সঙ্গী পছন্দ করেন। সঙ্গীর ওপরে অতিরিক্ত নির্ভর করার ব্যাপারটি তার ওপরে একরকমের চাপ প্রয়োগের মতন হয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রেই। ফলাফল দাঁড়ায় এই যে তিনি সম্পর্কটি আর বহন করতে চান না।
তাই সম্পর্ক যত গভীরই হোক না কেন,সঙ্গীর ওপর কখনোই এতবেশি পরিমাণে নির্ভরশীল হওয়া চলবে না যাতে করে করে সম্পর্কচ্ছেদের পর আপনার কষ্টটা বেশি হয়। কিংবা হারিয়ে যায় আপনার নিজের স্বকীয়তা আর লক্ষ্য রাখতে হবে, অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা যেন সম্পর্ক ভাঙার কারণ হয়ে না ওঠে। আবার যারা প্রেমিক বা প্রেমিকার প্রতি মানসিক ভাবে বেশি নির্ভরশীল থাকেন, ভালোবাসায় তাদের প্রতারিত হওয়ার হারটাও সবচাইতে বেশি! কিন্তু কিভাবে জানবেন আপনি আপনার সঙ্গীর ওপর নির্ভরশীল কিনা কিংবা নির্ভরশীল হলেও এই নির্ভরশীলতার মাত্রা কতটুকু বা ক্ষতিকর পর্যায়ের কিনা? তাই আজকে আপনাদের জন্য রইল একটি কুইজ।
১. আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে আপনার বন্ধুবান্ধবের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করতে বলে তবে আপনি কি করবেন?
ক) যোগাযোগ বন্ধ করব। সে যা বলে আমার ভালোর জন্যই বলে।
খ) তার সামনে যোগাযোগ রাখবো না।
গ) আমাকে আগে জানতে হবে তার এইরকম বলার পেছনে কারণ কি।
ঘ) অবশ্যই আমি মেনে নেব না।
ঙ) সে আমাকে এইরকম কখনোই বলবে না।
২. আপনার সঙ্গী আপনাকে কোন কাজ দিলে আপনি চেষ্টা করেও সময়মত কাজটি করতে না পারলে কি আপনার নিজেকে অপরাধী মনে হয়?
ক) কখনোই না। আমি চেষ্টা করেছিলাম।
খ) সে আমাকে কিছুই করতে বলেনি আজ পর্যন্ত
গ) হ্যাঁ। করতে পারলে ভালো লাগতো
ঘ) অনেক বেশি অপরাধী মনে হয়। ওর কাজটি আগে করে দেয়া উচিত ছিল।
ঙ) নাহ। কেন অপরাধী লাগবে? আমি তো অপরাধ করিনি।
৩. আপনার কি আপনার সঙ্গীকে না বলাটা অনেক কঠিন মনে হয়?
ক) না। কেন বলতে পারব না? আমার যেমন মনে হবে তেমন বলতে পারি।
খ) মাঝে মাঝে বলতে পারি না।
গ) ও এমন ভাবে বলে না বলতে পারি না একেবারেই।
ঘ) বলি। কারণ তার আমার সমস্যা বুঝা উচিত।
ঙ) অনেক বেশি কঠিন মনে হয়। মনে হয় না বললে ও রাগ করবে।
৪. আপনাকে কি আগে কেউ কখনো আপনার সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার জন্য সাবধান করেছে?
ক) একবার একজন কাছের বন্ধু করেছিল
খ) কখনোই কেউ করে নি
গ) আমার পরিবার বলে আমি নাকি বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি।
ঘ) আমি আত্মনির্ভরশীল একজন মানুষ। কখনোই কারো ওপর নির্ভরশীল নই।
ঙ) মাঝে মাঝে আমার নিজেরই মনে হয় আমি ওর ওপর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীল।
৫. আপনি কি মনে করেন আপনার খুশি থাকা না থাকা সম্পূর্ণ আপনার সঙ্গীর ওপর নির্ভর করে?
ক) ওই আমার সব। ওকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না
খ) মাঝে মাঝে মনে হয় ও না থাকলে আমার কি হতো।
গ) কখনোই না। আমার নিজস্বতা আছে। আমি আমার মতো খুশি।
ঘ) ওর মন ভালো না থাকলে আমারও থাকে না কিন্তু তাই বলে আমার সব খুশি ওর কাছে এমনটি নয়।
ঙ) দূরে থাকলে অনেক মিস করি। মন খারাপ থাকে।
ফলাফলঃ
প্রতিটি উত্তরের জন্য আলাদা নম্বর নির্ণয় করে যোগ করুন।
১. এর ক-০,খ-৫, গ-১০, ঘ-১৫, ঙ-২০
২. এর ক-১৫,খ-১০, গ-৫, ঘ-০, ঙ-২০
৩. এর ক-২০,খ-১০, গ-৫, ঘ-১৫, ঙ-০
৪. এর ক-১০,খ-২০, গ-৫, ঘ-১৫, ঙ-০
৫. এর ক-০,খ-৫, গ-২০, ঘ-১৫, ঙ-১০
০-২০এর জন্যঃ
আপনি আপনার সঙ্গীর ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। এতোটা নির্ভরশীলতা ভালো নয়। আপনার সঙ্গী আপনার অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার জন্য আপনাকে অপছন্দ করা শুরু করতে পারে। আপনার সম্পর্কের বাইরের পৃথিবীতে সময় দিন। এতে করে সম্পর্ক ঠিক থাকে সবার সাথেই। আপনার নিজস্বতা হারাবেন না।
২১-৪০এর জন্যঃ
আপনি আপনার সঙ্গীর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু আপনার নিজস্বতা এখনো আছে। তবে আপনি নিজেকে সামান্য পরিবর্তন না করতে পারলে অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারেন।
৪১-৬০এর জন্যঃ
আপনি সব দিক ঠিক রেখে সম্পর্কে আছেন। এটি খুব ভালো একটি স্থান। আপনি আপনার নিজস্বতা বজায় রেখেই আপনার সঙ্গীর প্রতি নির্ভর। যতোটুকু দরকার ঠিক ততোটুকুই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
৬১-৮০ এর জন্যঃ
আপনি আত্মনির্ভরশীল ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে দ্বিধায় আছেন। আপনার জন্য কোন কাজটি করা ঠিক হবে টা আপনি বুঝে উঠতে পারছেন না। আপনি নির্ভরশীল নন। কিন্তু সঙ্গীর মানসিকতা বুঝে নির্ভরশীলতার অভিনয় করে নিজেকেই দ্বিধায় ফেলছেন। প্রথমে সঙ্গীকে বুঝে নিন। আপনি যেমন ঠিক তেমনটিই সঙ্গীর সামনে আনুন। সম্পর্ক ঠিক থাকবে।
৮১-১০০এর জন্যঃ
আপনি অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল। আপনার সঙ্গীর মতামতের প্রয়োজন আপনি তেমন একটা মনে করেন না। এটি ঠিক নয়। আপনার অতিরিক্ত আত্মনির্ভরশীলটা আপনার সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে। কিছুটা হলেও সঙ্গীর প্রতি নির্ভরশীল হন।
Tidak ada komentar: ভালোবাসার মানুষটির প্রতি কি আপনি অতিরিক্ত নির্ভরশীল?
Posting Komentar