শুরুটা ছিলো ১৯১৯ সালে। প্রথম বন্ধু দিবসের প্রচলন করেন ‘হলমার্ক কার্ডস’ এর প্রতিষ্ঠাতা জয়সি হল। পরবর্তীতে ১৯৩৫ সালে আমেরিকান সরকার আগস্টের প্রথম শনিবার এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। প্রতিবাদে ও শোকে পরের দিন ওই ব্যক্তির এক নিকট বন্ধু আত্মহত্যা করেন। এরপরই বন্ধুদের ভালোবাসার প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমেরিকান কংগ্রেসে ১৯৩৫ সালে আগস্টের প্রথম রোববারকে বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর থেকেই প্রতিবছর আগস্টের প্রথম রবিবার বিশ্বব্যাপী বন্ধু দিবস বা ফ্রেন্ডশীপ ডে পালিত হয়।
বন্ধু দিবসের প্রচলনের শুরুটা এত ঘটা করে ছিলো না। এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম ভারতে এই দিবসের প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তীতে নব্বইয়ের দশকের দিকে বাংলাদেশে বন্ধু দিবস পালন করা শুরু হয়। এর পর ইন্টারনেট ও টিভি চ্যানেল গুলোর মাধ্যমে বন্ধু দিবস পালনের প্রসার ঘটে। বর্তমানে বেশ ঘটা করেই বন্ধু দিবস পালন করা হয়।
বাংলাদেশে বন্ধু দিবস পালনঃ
বন্ধু দিবস পালনের রীতি প্রায় সব দেশেই একরকম। বাংলাদেশে সাধারণত তরুণরাই বন্ধু দিবস পালন করে। একটু বয়স্করা এখনও বন্ধু দিবস পালনে তেমন একটা আগ্রহী নন। আগস্টের প্রথম রবিবার শুরু হতেই বন্ধুরা একে অপরকে ফোন, ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপি কিংবা বাসায় গিয়ে ফ্রেন্ডশীপ ডে উইশ করে। বন্ধুত্বের আশির্বাদকে সেলিব্রেট করতে এই দিনটা আসার আগেই কার্ডের দোকান, গিফট শপ, খাবার দোকান ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলগুলোতে সাজ সাজ রব পরে যায়। বিশেষ করে কার্ডের দোকান ও খাবার দোকানগুলোকে আলাদা ভাবে সাজানো হয়। হয়তো বন্ধুরা সবাই একসাথে ঘুরতে বের হয়, একজন আরেকজনকে ফ্রেন্ডশীপ ব্যান্ড পরিয়ে দেয় বা ছোট কোন উপহার আদান- প্রদান করে। কেউ কেউ আবার এই দিনটির জন্য বিশেষ ভাবে কেক বানিয়ে সবাই মিলে উৎসব করে। এবার যেহেতু বন্ধু দিবসটা রোজার মধ্যে পড়েছে, তাই অনেক বন্ধুরাই ইফতার পার্টির আয়োজন করবে ভেবে রেখেছেন। সব মিলিয়ে আমাদের দেশে বেশ উৎসব মুখর পরিবেশেই বন্ধু দিবস পালিত হয় এবং হতে যাচ্ছে এবারও।
কেমন হতে পারে বন্ধুর জন্য উপহার?
বন্ধুকে দেয়ার জন্য সেরা উপহার হলো ‘ভালোবাসা’ নিঃসন্দেহে। আর এই ভালোবাসার টোকেন হিসেবে কিছু উপহার দিতে চাইলে কেমন হতে পারে তার রকমফের এক নজরে দেখে নিন।
ফ্রেন্ডশীপ ব্যান্ডঃ
গিফট ও কার্ড শপ গুলোতে নানান রঙের ফ্রেন্ডশীপ ব্যান্ড পাওয়া যায়। ৫০ থেকে ২০০ টাকার ভেতরেই পেয়ে যাবেন সুন্দর একটি ফ্রেন্ডশীপ ব্যান্ড। চাইলে নিজের হাতেও বানিয়ে নিতে পারেন। ২/৩ রঙের সুতা কিনে ও সঙ্গে কিছু রঙিন বিডস্ বসিয়ে ঘরেই বানিয়ে নিন ফ্রেন্ডশীপ ব্যান্ড।
কার্ডঃ
প্রায় সব কার্ডের দোকানেই বন্ধু দিবস উপলক্ষে বিশেষ কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। ১০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্খিত কার্ডটি। আর আপনি যদি স্টুডেন্ট হন তাহলে এতো খরচ না করে হাতেই বানিয়ে দিন সুন্দর একটি কার্ড। কার্ডের ভেতরে ২/৩ লাইন লিখে বন্ধুর প্রতি আপনার ভালোবাসা জানিয়ে দিন।
গিফটঃ
দিনটি উপলক্ষে ছোট বড় নানান রকম গিফট আইটেমে গিফট শপ গুলো বোঝাই হয়ে থাকে। এর মধ্যে থেকেই আপনার বাজেট ও বন্ধুর পছন্দ অনুযায়ী উপহার বেছে নিন। আর কেনা গিফট দিতে না চাইলে নিজের হাতে বানিয়ে দিন। বাড়িতেই আপনি ফটোফ্রেম, কলমদানী, পটারী, ল্যাম্প ইত্যাদি বানিয়ে ফেলতে পারেন বন্ধুর জন্য।
ফুলঃ
গিফটের সাথে প্রিয় বন্ধুটির জন্য একটি হলুদ গোলাপ নিতে ভুলে গেলে চলবেনা। ভাবছেন হলুদ গোলাপের কথাই কেন বলছি তাই না? দোকানে হরেক রঙের গোলাপ পাওয়া গেলেও হলুদ গোলাপ হলো বন্ধুত্বের প্রতীক। তাই এই দিনটির জন্য হলুদ গোলাপের বিকল্প নেই।
বন্ধুকে কি কি দেয়া যায় তো দেখলেন। এবার তাহলে সবকিছু যোগাড় করে বাড়িতে গিয়ে সারপ্রাইজও দিতে পারেন আপনার বন্ধুকে। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করে তুলুন। জয় হোক বন্ধুত্বের।
Tidak ada komentar: শুভ কাটুক বন্ধু দিবস
Posting Komentar