বন্ধুত্ব কি সব সময়েই আশীর্বাদ? নাকি বন্ধুত্বেরও আছে কিছু ঝুঁকি? বন্ধু ছাড়া যেমন কারো জীবন কাটানো সম্ভব না, ঠিক তেমনই বন্ধুর কারনেও হয়ে যেতে পারে আপনার বড় কোনো ক্ষতি। বন্ধু সেজে ক্ষতি করাটাও বেশ সোজা। কারণ বন্ধুকে মানুষ অন্ধের মত বিশ্বাস করে। আর এই এই সরল বিশ্বাসের সুযোগ নেয় বন্ধুরূপী শত্রুরা। তাই বলে কি সব বন্ধুকেই অবিশ্বাস করা যায়? মনে অবিশ্বাস নিয়ে তো আর বন্ধুত্ব করা যায় না। নকল বন্ধুকে চেনার আছে কিছু সহজ উপায়। আসুন জেনে নেয়া যাক আপনার জন্য ক্ষতিকর নকল বন্ধু চেনার ৫টি উপায়।
বিপদে এগিয়ে আসে না
প্রকৃত বন্ধুর পরিচয় মেলে বিপদের সময়। আপনি যখন বিপদে পড়বেন তখন প্রকৃত বন্ধুরাই সবার আগে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এক শ্রেনীর বন্ধু সব সময়েই এটা ওটা অযুহাত দিয়ে আপনার বিপদের সময়টাকে এড়িয়ে যাবে। বিপদের সময় সাহায্য করা তো দূরে থাক, অনেক সময় অনেকে উল্টো বিপদ বাড়িয়ে দেয়। তাই আপনার অসময়ে কিংবা প্রয়োজনের সময় যারা এগিয়ে আসে না কিংবা খোঁজ খবরও নেয় না, তাদেরকে এড়িয়ে চলুন। কারণ তারা আপনার প্রকৃত বন্ধু নয়।
অতিরিক্ত খরচ করায়
কিছু মানুষ আছে যারা বন্ধুর উপর নিজের যাবতীয় খরচ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। বাস ভাড়া, ফটোকপির টাকা, খাওয়ার টাকা কিংবা এটা ওটা কেনার নাম করে বন্ধুর পকেট থেকে অনেকগুলো টাকা খরচ করাই এ ধরণের বন্ধুদের বৈশিষ্ট্য। কারণে-অকারনে টাকা ধার নিয়ে ফেরতও দেয় না এই ধরণের বন্ধুরা। বন্ধুর আর্থিক অবস্থা চিন্তা না করেই বন্ধুর খরচ বাড়িয়ে নিজের খরচ কমানোর পরিকল্পনায় থাকে এ ধরণের ক্ষতিকর বন্ধুরা। তাই এসব বন্ধুদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকাই আপনার মানিব্যাগের জন্য ভালো।
মিথ্যা বলে
প্রকৃত বন্ধু আপনার সাথে কখনোই মিথ্যা বলবে না। যারা প্রকৃত বন্ধু না তারা সময়ে-অসময়ে নানান রকম মিথ্যা বলে। নিজের পরিচিতি নিয়ে মিথ্যা বলে, পরিবারের আর্থিক অবস্থা নিয়ে মিথ্যা কথা বলে। এছাড়াও তারা বন্ধুর প্রতি দায়িত্ব এড়ানোর জন্য নানান রকম মিথ্যা অযুহাত খোঁজে। আবার কখনো কখনো নিজের দোষ বন্ধুর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার জন্যও মিথ্যা বলে থাকে এ ধরণের মানুষরা। তাই আপনার বন্ধুটির যদি আপনার সাথে মিথ্যা বলার অভ্যাস থাকে তাহলে তার সাথে দূরত্ব বজায় রাখুন।
অন্যের ব্যক্তিগত কথা আপনাকে বলে
কিছু বন্ধু আছেন যারা অন্যের ব্যক্তিগত কথা কিংবা গোপনীয় নানান বিষয় আপনার সাথে বেশ আগ্রহ সহকারে আলাপ করে। কেউ হয়তো তাকে বিশ্বাস করে কিছু কথা বলেছিলো। সে এসে আপনাকে সব জানিয়ে দেয় এবং সেটা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। যে সব বন্ধুরা অন্যের গোপনীয় কথা আপনার সাথে আলোচনা করে, তারা আপনার গোপনীয় বিষয়ও অন্যের কাছে গিয়ে বলে দেয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই এ ধরণের বন্ধুদের কে বিশ্বাস করা ঠিক না।
অতিরিক্ত দোষ ধরে
একজন বন্ধু যদি সারাক্ষণ বন্ধুর অপর দোষ ধরে তাহলে সে প্রকৃত বন্ধুত্ব নয়। কিছু মানুষ আছে যারা সারাক্ষণই বন্ধুকে বিভিন্ন কারণে দোষারোপ করতে থাকে। বন্ধু এটা করেনি কেন, ওটা করেনি কেন, ফোন দেয়নি কেন ইত্যাদি নানান অভিযোগে জীবন অতিষ্ট করে তোলে এধরনের বন্ধুরা। অনেকে আবার বিনা কারণে নানান রকম বাজে সমালোচনা করে চেহারা, চাকরি, পরিবার, প্রেম ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে। একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন, আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যার নানান রকম অভিযোগ, তিনি কখনোই প্রকৃত বন্ধু নন। আড্ডায় ঠাট্টাচ্ছলে হলেও যে আপনাকে হেয় করার চেষ্টা করে,সে কখনো প্রকৃত বন্ধু নয়। বন্ধুত্ব মানে যে যেমন, তাকে সেভাবেই মেনে নেয়া। বন্ধুর সম্মানকে নিজের সম্মান মনে করা।
Tidak ada komentar: ৫টি উপায়ে চিনে নিন নকল বন্ধুকে
Posting Komentar