একটা গোপন কথা ছিল বলবার, বন্ধু সময় হবে কি তোমার?
একবার শুনে ভুলে যেও বারবার, ভুলেও কাউকে বোলো না আবার
এতদিন ছিল সাধারণ তার মাঝে একজন , যাকে আজ বড় আলাদা লাগে ...
এরকম সাধারণ থেকে অসাধারণ হওয়ার গল্পটা নতুন নয়। একসাথে অনেকটা পথ চলতে চলতে কখন যে প্রিয় বন্ধুটিই ভালোবাসার মানুষ হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না। ব্যাপারটা ভিতর থেকে অনুভব করতে হয়। এমনও হতে পারে রোজ দেখা হয়। আচমকা তার জন্য ঘুমের মধ্যে বুকটা হু হু করে উঠল, আপনি ঘুম ভেঙে উঠেও বসলেন। বুঝতে পারলেন আপনার ভিতর থেকে কেউ একজন আপানাকে ঝাঁকি দিয়ে বলে গেলো,আপনি ভালোবাসেন... । এঅন্যরকম নতুন অনুভূতি, তাই না?
ক্লাস সিক্স থেকে অর্ক আর ইরা (ছদ্দনাম) একসাথে স্কুলে যায়। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় ঘুরাফেরাও একসাথে। এরপর স্কুল শেষ করে কলেজ, তারপর একই ভার্সিটিতে দুজন। এই সাত-আট বছর যেন দেখতে দেখতে কেটে গেল। দুজনের বন্ধুত্বটা এতো চমৎকার যে অন্য কেউ এদের মাঝখানে আসতেই পারল না বা বলা ভালো ওদেরও কখনো মনেই হয়নি আলাদা বা অন্যরকম কোন সম্পর্কের দরকার আছে। কলেজের বন্ধুরা অনেকেই তখন প্রেম করতো আর অর্ক-ইরা মজা করতো তাদের নিয়ে। তবে ওদের দুজনকে নিয়ে কিছু বললে খেপে গিয়ে বলতো আমরা শুধুই বন্ধু। কিন্তু ভার্সিটির ফাস্ট ইয়ারে যখন ইরার অনেক বন্ধু হল তখন অর্ক ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারলো না। যদিও ইরা তখনও অর্ককেই সবচেয়ে বেশি সময় দেয়, এখনও আগের মতোই ঘুরতে যায় কিন্তু তারপরও অর্কর যেন আর আগের মতো পাওয়া হয়না ইরাকে, ভীষণ অভিমান হয় অন্য কেও ইরার সাথে মিশলে। একদিন অর্ক হঠাৎ করেই বুঝতে পারলো ইরার জন্য মনের এই পরিবর্তনটা অন্যরকম। এরকম অস্থিরতা এর আগে কখনো হয়নি। ইরার সাথে একদিন একটু কম কথা হলে খারাপ লাগে, ইরা ক্লাসে না আসলে খুব চিন্তা হয়, যতক্ষণ ঘুম না আসে ততক্ষন ইরাকে নিয়ে ভাবতেই ভালো লাগে। নিজেকেই নিজের প্রশ্ন, কেন এমন হচ্ছে! অন্য বন্ধুদেরকে খুলে বলে অর্ক। বন্ধুরা বলে এটা শুধু এখন আর বন্ধুত্ব নেই, অর্ক ভালোবেসে ফেলেছে ইরাকে।
এই হঠাৎ চেনা বন্ধুর প্রতি অচেনা ভালোলাগাটাই ভালোবাসা হয়ে যায় অনেকসময়। হয়তো কেউ তার ভালোবাসা বুঝতে পেরে বন্ধুটিকেই জীবনসাথি বানিয়ে সারাজীবন একসাথে থাকে। আর কেউ কেউ হয়তো বুঝতেই পারেনা। আবার কোন একজন বুঝতে পেরেও ভয়ে বলতে পারে না বন্ধুত্ব হারাতে হতে পারে ভেবে।
কিন্তু একটা কথা নিপাতনে সিদ্ধ । একজন জীবনসঙ্গী ভালো বন্ধু নাও হতে পারে কিন্তু একজন ভালো বন্ধু নিঃসন্দেহে একজন ভালো জীবনসঙ্গী হবে। বন্ধুর মতো আর কেইবা আমাদের সব খেয়াল খুশি মেনে নেয়, সবচেয়ে ভালো আর সবচেয়ে খারাপ মুহূর্তেও যে ছেড়ে যায় না সে তো ঐ বন্ধুটিই। এমনিতে যতই মুখচোরা স্বভাবের হোক না কেন আপনার সামনে আসলেই মনের আগল খুলে কথা বলে আপনাকে বন্ধু ভেবেই। এমন নির্ভরতা আর বিশ্বাস আর কার কাছে পাবেন আপনি! তাই একটু থেমে বোঝার চেষ্টা করে দেখুন তো আপনাদের বন্ধুত্বটি কি শুধুই বন্ধুত্ব না ভালোবাসা!
লিখেছেন- তাহমিনা সুলতানা ছন্দা
Tidak ada komentar: নিছক বন্ধুত্ব? নাকি ভালবাসা?
Posting Komentar