Minggu, 08 Desember 2013

ছুটির দিনের শেষ বিকেল (০৬ ডিসেম্বর ২০১৩)

Sexy Hot Photos: ছুটির দিনের শেষ বিকেল (০৬ ডিসেম্বর ২০১৩).
আজ ছুটির দিন।  সকালে তাই ঘুম ভাঙ্গলো একটু দেরিতে। অবরোধ থাকার কারনে আজ সাভার যাওয়া হলনা।  তাই ১২.৩০ মি পর্যন্ত অফিস এর কাজ শেষ করে লাঞ্চ সেরে নিলাম। 

দুপুরটা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম। যখন বন্ধুদের ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তখন বিকাল ৫ টা।রওনা দিলাম নারায়ানগঞ্জ ২ নম্বর গেইটের দিকে। ভাবলাম হাতে যেহেতু কোনো কাজ নেই তাই আমার এক কলিগকে নিয়া সিনেমা দেখার প্লান করলাম। সময় কম থাকার কারণে বাসা থেকে নারায়ানগঞ্জ ২ নম্বর গেইটের আশা সিনেমা হলের উদ্দেশে রওনা দিলাম। যখন আমরা ২ নম্বর গেইটের কাছে আসলাম তখনও সিনেমা শুরু হাওয়ার অনেক সময় বাকি । তাই আমরা হলের ভিতরে না গিয়ে আসে পশের এলাকাটা একটু ঘুরে দেখতে লাগলাম। 

আমরা প্রধান সড়ক পার হয়ে রেললাইনের দিকে রওনা দিলাম। রেললাইনের কাছাকাছি পৌছে একটা জটলা দেখে একটু থমকে দাড়ালাম। দেখলাম ছোট একটা বাজারের মত, রেললাইনের দু পাশে দোকান সাজিযে বিক্রেতাগণ বসে আছে আর ক্রেতাগণ রেললাইনের উপরে হেটে হেটে  বিক্রেতাগণকে পরখ করে দেখছে। বাজারটা খুব বেশি বড় নয় উত্তরে ও পূর্বে মোট ২০০ ফিট হবে।  বেশ কৌতহলের সাথে আমি আমার রুম মেইড আর হাত ধরে বিভিন্ন বিক্রেতাগণকে দেখছি আর রেললাইনের উপর দিয়া হেটে চলছি।  জীবনে এই প্রথম কোনো মানুষ বিক্রির হাটে আসলাম, অবাক হাওয়ার চেয়ে উত্সাহ আর কৌতূহলই ছিল বেশি।  তবে অনেক সিনেমাতে এধরনের পল্লী বা বাজার দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এই প্রথম, তবে ব্যবধান এই- সেখানে বিক্রেতাগণ থাকে খোলামেলা আর এখানে বোরকা পরা।  

আমরা যখন রেললাইন পার করছি তখন মাঝে মাঝে দু একজন বিক্রেতার কাছ থেকে কি যেন একটা কথা কানে ভেসে আসলো, কিন্তু লোকের ভিরে ভালো করে শুনতে পেলাম না। তবে পাশের ক্রেতাগনের মুখে শুনলাম পিছনের বড় একটা আবাসিক হোটেলে এ আর চেয়েও বড় বাজার বসে, যেখানে বোরকা পরা থাকেনা, তাই বাছাই করতে সুবিদা হয়।  আমরা বাজার পার হয়ে চুরিফিতা মার্কেট ঘুরে সেই বিখ্যাত টান বাজার এর উপর দিয়ে আশা সিনেমা হলের দিকে হাটা দিলাম। (সেই বিখ্যাত টান বাজার সম্পর্কে পরে লেখার কোনো এক জায়গায় বলব)

আমি যখন হলের দিকে হাটছি, তখন আমার মনটা খুব খারাপ লাগছিল, এই অল্প কত পয়সার জন্য নিজেকে বিক্রি করার আশায়, ক্রেতার অপেক্ষায় কিভাবে নির্লজ্জের মত রাস্তায় দড়িয়ে আছে ? এরাও তো আমাদের সমাজেরই মানুষ, একজন নাগরিক, একজন দামী ভোটার। 

আমি সেক্স আর বিরোধী নই, পরকীয়াও আমার খারাপ লাগেনা। দেহ বিক্রিতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। আমার আপত্তি হলো, একজন বিক্রেতা আর ভিন্ন ভিন্ন ক্রেতা, এখানেই আমার আপত্তি। সামান্য কটা টাকার জন্য প্রতিদিন কত মানুষের কাছে বিনা বাধায় দেহটাকে তুলে দিতে হয়, যদি ক্রেতা একজন হতো আর বিক্রেতাও একজন হতো তাহলে আমার আপত্তি ছিলনা। 

বন্ধুদের কাছে শুনেছি বাজারে সেক্স এর নতুন ভার্সন আসছে, "ওয়ান টু ওয়ান " একজন বিক্রেতা শুদু একজন ক্রেতার সাথেই চুক্তি করবে, যে তুমি আমার সকল খরচ বহন করবা, তার বিনিময়ে আমি তোমার সকল চাহিদা পূরণ করে দেব। এটা নিজেকে বিক্রি করার সব চেয়ে সর্বশেষ ও নিরাপদ পদ্দতি। তবে এই পদ্দতি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বেশি অনুসরণ করে। মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েরা গ্রাম থেকে শহরে আসে লেখাপড়ার জন্য বাড়ি থেকে যে টাকা দেয় তা দিয়া খাবার ও বাসা ভাড়া দিতে চলে যায়, তাই বাড়তি টাকার আসায় অনেকে (সবাই না) এই পদ্দতি অনুসরণ করে। আবার উচ্চ ঘরের বখে যাওয়া মেয়েরাও অনেকে এই পদ্দতি অনুসরণ করে।আবার কেউ কেউ কিশোরী বয়সের শুরুতে নিকট অত্তীয়দের থেকে ধর্ষিত হয়েছিল কাউকে বলেনি, অথবা কোনো বান্ধবীদের পাল্লায় পরে এই নিষিদ্দ পথে পা বাড়িয়াছে। আজ আর ফিরতে পারছে না। 

আর একটা নতুন পদ্দতির কথা শোনা যাচ্ছে, কেউ কেউ বিয়া না করেও স্বামী-ইস্ত্রির মত এক বাসায় থাকছে, সব খরচ অর্ধেক অর্ধেক বহন করছে, এতে বাসা ভাড়া নেয়ার জামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, নিরাপত্তাও পাওয়া যায়, খরচও কম লাগে, প্রেমও করা হলো, নিরাপদে মাঝে মাঝে জৈবিক চাহিদা গুলোও মিটানো গেল, যেদিন বুনি-বনা ঠিক মত হবে না, সেদিন চুক্তি বাতিল। আবার কারো সাথে নতুন চুক্তি। লেখাপড়া শেষ আবার দুজনে ব্যাচেলর হয়ে যে যার বাড়ি ফিরে গেলাম। 

যাকগে যেকথা বলছিলাম, আমরা যখন ওই বাজারের ভিতর দিয়ে হেটে যাচ্ছি, তখন রাস্তার দু পাশের অনেক মানুষ বাকা ও ঘৃণার দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকাস্ছিল। আর রাস্তার ওই দুধারের মানুষগুলোর প্রতিছিল শত ঘৃনা আর ভত্সনামূলক নির্বাক প্রতিবাদ। 

তবে আমার কিন্তু তেমন খারাপ লাগেনি, ওই সব মানুষগুলোর প্রতি কোনো ঘৃনাও জন্মায়নি। কারণ অনেক সংসার আছে যেখানে একজন গৃহ বধু সারাদিনের পরিশ্রমের বিনিময়ে দুটো ভাত আর বছরে দুটো কাপড় পায়, কিংবা রাতে কারো ইচ্ছা পূরণের বিনিময়ে। এটাতে সমাজের সায় আছে। আর এই রেললাইনের পাশে দরিয়া থাকা মানুষগুলোও দিনে বা রাতে এক বা একাদিক মানুষের মনের খোরাক মিটিয়া চলে তার বিনিময়ে সে পায় দুবেলা খাবার আর বাসা ভাড়া। এটাতে সমাজের সায় নেই। নেই বা বলি কি করে যারা এদের নিয়া আমোদ-প্রমোদ করে বা ওই রেললাইনের উপর দাড়িয়ে ছিল এই বোরকা পরা মেয়েদেরক বাছাই করার জন্য-তারাও তো এ সমাজেরই লোক, বড় বড় কোম্পানির অফিসার, কারো দাদা, কারো ভাই, কারো বাবা। তাহলে একজন আদর্শ গৃহ বধু আর এই রেললাইনের পাশে দড়িয়ে থাকা পারমিতাদের মাঝে পার্থক্য কোথায় ?

যাক ওসব কথা ! সব কথার শেষ কথা হলো, অবৈধ  যেকোনো ধরনের সম্পর্ক শরীরিক আর মানসিক হোক দুটোই, ধর্ম ও সমাজের চোখে অপরাধ ও ঘৃণিত। আর তাছাড়া আজকাল দেশের অবস্থা এত খারাপ অবস্তানে নেই যে দেহ বিক্রি করে পেট চালাতে হবে। এখন অনেক প্রাইভেট কোম্পানি আছে যেখানে যেকোনো ধরনের মানুষ সে শিক্ষিত বা অশিক্ষিত হোক কোনো না কোনো কাজ পাবেই।  আর সেখানে কাজ করে তার প্রতিদিনের চাহিদা মেটাতে পারবে। কারণ যারা এ পেশায় আছে তারা বুড়া নয়, তাদের সবার বয়স ১২-৪০ বছর। অতএব তারা অনায়াসে ভালো কাজে তাদের শক্তি ও ইচ্ছা কাজে লাগাতে পারে। হয়ত তারা ফিরতে চায়না, তাই ভিবিন্ন অজুহাত দিয়ে চলে। চেষ্টা থাকলেই ফেরা যায়, আমরা আশা করি সবাই এপথ থেকে ফিরে আসুক, আলোর পথে, কাছের মানুষগুলো নিয়া সুন্ধর ও  সুখী সংসার ও সুন্ধর সমাজ গড়ে তুলুক।

আমরা রাস্তা পার হয়ে 'আশা সিনেমা' হলে পৌছে গেলাম। "বুক ফাটেতো মুখ ফাটেনা" সিনেমাটি দেখলাম। দীর্গ ৫ বছর পর এই সিনেমা হলে ঢুকলাম, ছবির কোয়ালিটি, হলের পর্দা, নায়ক-নায়িকা (সাকিব-অপু-রোমানা) সব মিলিয়ে ভালোই লাগলো।  


সেই বিখ্যাত টান বাজার হয়ে যখন হাটছি, তখন রাস্তার দু পাশের ছোট ছোট দোকান দেখে আমার সিনেমার মানুষ বিক্রির বাজারের কথা মনে পরে গেল, আমি আমার কলিগ কে জিজ্ঞাসা করলাম, এত বড় রাস্তার পাশে এত ছোট ছোট দোকান কেন ? সে তখন আমাকে এই টান বাজারের যৌবনের কথা বলল। এক সময় এখানেই ছিল বিখ্যাত মানুষ বিক্রির বাজার। এই ছোট ছোট ঘরে সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে প্রতি মুহূর্ত লুট হয়ে যেত, সদ্য বেড়ে ওঠা তরতাজা ফুলগুলো, কিংবা  সেই ফুটফুটে ছোট মেয়েটির সংসার বাধার স্বপ্নগুলো এই ঘরের মেজেতেই পিষ্ট হয়ে যেত কোনো ৪০ উর্ধ হিংস্র মানুষের পদতলে। কত বধুরা তাদের স্বামীর অজান্তে এই ঘরেই........

রাত নয়টার একটু বেশি সিনেমা শেষ হলো, আমরা হাটতে হাটতে টান বাজার হয়ে ২ নম্বর হয়ে রিকশা নিয়া বাসায় ফিরলাম।  


পরে আবার লিখব.......

 

Related Posts: ছুটির দিনের শেষ বিকেল (০৬ ডিসেম্বর ২০১৩)

Tidak ada komentar: ছুটির দিনের শেষ বিকেল (০৬ ডিসেম্বর ২০১৩)

Popular Posts
Blog Archive