প্রতিদিন পৃথিবী এগিয়ে চলেছে, আর পৃথিবীর সাথে আমরাও। তীব্র গতিময় জীবনে দৌড়ে চলেছি সবাই। এক মুহূর্ত বিশ্রামের অবকাশ নেই, এক মুহূর্ত থামার অবকাশ নেই। কি করেই বা থাকবে! এই প্রতিযোগিতায় ভরা পৃথিবীতে এক মুহূর্তের অবকাশ যাপন করতে গেলেই যেন পিছিয়ে পড়বেন সামনে যাওয়ার ইঁদুর দৌড়ের হিসেবে।
তাই বলে কি রোবটের মতন হবে জীবন? ভালবাবাসাহীন আর আবেগহীন?
কক্ষনো তো নয়! ভালবাসা ছাড়া কিসের বেঁচে থাকা বলুন! আর জীবনে ভালবাসার রঙ সব সময় ধরে রাখতে প্রয়োজন ভালবাসার মানুষটিকে কাছে রাখা, বেঁধে রাখা আন্তরিকতার বাঁধনে। ভালবাসা পেতে গেলে আগে ভালবাসা দিতে হয়, জীবনের এই সহজ সমীকরণটা কখনও ভুলে গেলে চলবে না। সময় মেলে না, ভীষণ ব্যস্ত জীবন, অনেক কাজের চাপ... ইত্যাদি ইত্যাদি বাহানার অভাব নেই। কিন্তু মন থেকে ইচ্ছা থাকলে আসলে ভালবাসার মানুষটিকে অবশ্যই দেয়া সম্ভব আন্তরিক কিছু সময়।
কিন্তু কি করে? আসুন জেনে নেই সে সবেরই নানা দিক।
- রোজ তো বাড়ি ফিরে কাজ নিয়ে বসেন, আজ না হয় বসলেন না। আগামীকাল ছুটির দিন, কাজ না হয় কালই করবেন। আজকের রাতটি বরাদ্দ রাখুন ভালবাসার মানুষটির জন্য।
- ফেসবুকেও তো নিত্যদিন বসেন। একটা রাত ফেসবুকিং না করলে কি হবে? কিচ্ছু না! ফেসবুক আর মোবাইল ফোনকে দূরে সরিয়ে রাখুন না সাপ্তাহিক ছুটির অবসরে।
- রাতের বেলার খাবারটা একত্রে খান। একত্রে টি ভি দেখুন। এলেবেলে অনুষ্ঠান না দেখে চমৎকার একটা সিনেমা দেখে ফেলতে পারেন, তাতে দুজনেরই মন ফুরফুরে হবে।
- সন্তানদের সম্ভব হলে একটু জলদিই ঘুমাতে পাঠিয়ে দিন। তাতে আপনারা দুজন খানিটা বাড়তি সময় একত্রে পাবেন।
- ইচ্ছা হলে চা- কফির পেয়ালা হাতে বারান্দায় বা ব্যালকনীতে বসে উপভোগ করতে পারেন রাতের সৌন্দর্যও। এই ফাঁকে সেরে নিলেন সংসারের টুকিটাকি আলাপ।
- আপনার স্বামী/ স্ত্রী মানুষটির সাথে কথা বলুন। জরুরী কিছু হতে হবে এমন তো কোনও কথা নেই। কথা হতে পারে যে কোনও কিছু নিয়েই। ভাব বিনিময়ই সম্পর্ককে মজবুত করে।
- হয়তো পুরো সপ্তাহ আলাদা আলাদা সময়ে ঘুমানো হয়। অন্তত একটি রাতের জন্য হলেও একত্রে ঘুমাতে যান। ঘুম না আসলেও শুয়ে পড়ুন, আলাপ করুন পরস্পরের সাথে। দেখবেন মন অনেক হাল্কা লাগছে।
- শোবার আগে হাল্কা সংগীত শুনতে পারে দুজনে, মন ভালো লাগবে। চাপ কমবে।
- শারীরিক ভালবাসার ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক, জীবন সঙ্গী মানুষটিকে কাছে টেনে নিয়ে ঘুমাতে ভুলবেন না। যৌন সম্পর্কের চাইতেও একটুখানি মমতা ভরা স্পর্শ দুজন মানুষকে মনের অনেকটাই কাছাকাছি নিয়ে আসে।
- ক্ষমা চান। কোনও কারণ না থাকলেও সরি বলুন, যদি কোনও কারণে কষ্ট দিয়ে থাকেন সেই কারণে। দেখবেন মানুষটি কেমন খুশি হয়ে ওঠে।
-তার কাজের প্রশংসা করুন। বা তার চেহারার প্রশংসা করুন। প্রশংসা করবার জন্য উপলক্ষ লাগে না।
- এবং সব চাইতে বড় কথা, পরস্পরকে ভালবাসুন। জীবনে পাশে চলার মানুষটিকে আপনার সন্তানদের বাবা/ মা রূপেই নাহয় ভালবাসুন। কিন্তু ভালবাসবেন অবশ্যই। ভালবাসতে পারলে ভালবাসা অর্জনও করতে পারবেন।
একটু চর্চা করেই দেখুন না পরামর্শগুলো। নিশ্চিত রূপেই আগামীকাল সকালে জীবনসঙ্গী মানুষটির সাথে অনেকটাই বেশী ঘনিষ্ঠ বোধ করবেন। কোনও কারণে মনে অভিমান বা ক্ষোভ থেকে থাকলেও তা মিলিয়ে গেছে দেখবেন অনেকটাই। নতুন একটা দিনে পাবেন সতেজ একটি দাম্পত্য।
Tidak ada komentar: চর্চা করুন অন্তরঙ্গতা
Posting Komentar