সামনের মাসে বিয়ের তিন বছর পূর্তির অনুষ্ঠান। দেখতে দেখতে কিভাবে যেন টোনাটুনি সংসারের তিনটি বছর পেরিয়ে গেলো। এবার সংসারে নতুন একজন অতিথির আগমন দরকার, নাহলে জীবনটা যেন ঠিক সম্পূর্ন হচ্ছে না। আর অনাগত সন্তানকে তো পরিকল্পনা ছাড়াই পৃথিবীতে আনা যায় না। পরিকল্পিত উপায়ে মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুতি নিয়েই সন্তান নেয়া উচিত। তা না হলে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে। জেনে নিন গর্ভধারণের পরিকল্পনার ধাপগুলো।
সঙ্গীর সাথে কথা বলুন
সন্তানের আকাঙ্ক্ষা মনে জাগলে প্রথমেই আপনার সঙ্গীর সাথে কথা বলে নিন। দুজনের মিলিত মতামত ছাড়া গর্ভধারণের পরিকল্পনা একেবারেই করা উচিত না। তাই একে অপরকে জিজ্ঞেস করে নিন এই মুহূর্তে সে সন্তান নিতে প্রস্তুত আছে কিনা, স্ত্রীর শরীর চাপটা নেয়ার জন্য তৈরি কিনা, স্বামী অর্থনৈতিক ব্যাপারটা সামলে নিতে পারবেন কিনা। যদি নেতি বাচক উত্তর আসে তাহলে সন্তান গ্রহণের পরিকল্পনা না করাই ভালো।
শারীরিক ভাবে তৈরি হয়ে যান
সন্তান নেয়ার সময় মায়ের শরীরের উপর দিয়ে অনেক বড় ধরণের চাপ যায়। তাই সন্তান নেয়ার আগে পুরো শরীরের একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেয়া ভালো। হরমোন, রক্ত কিংবা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা আগেই পরীক্ষা করিয়ে নিন। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে জেনে নিন ফলিক এসিড বা কোনো ভিটামিন খেতে হবে কিনা।
বাবা হওয়ার আগে পুরুষেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত। স্পার্মের সংখ্যা কেমন বা গুনগত মান কেমন এগুলো আগে থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিলে ভালো। সুস্থ, নীরোগ সন্তান চাইলে সন্তান নেয়ার অন্তত তিন মাস আগে ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দিন এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া শুরু করুন।
দাঁতের সমস্যা সমাধান করুন
ভাবছেন গর্ভধারণের সাথে দাঁতের সম্পর্ক আবার কি তাই না? গর্ভকালীন সময়ে দাঁতের কোনো ধরণের চিকিৎসা করা যায় না। তাই যেসব নারীদের দাঁতে ব্যাথা, দাঁত ক্ষয় কিংবা মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা আছে তাঁরা আগেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে সমস্যা সমাধান করে নিন। নাহলে গর্ভকালীন নয় মাসের জন্য দাঁতের ব্যাথার কষ্ট সহ্য করতে হবে।
অর্থ সঞ্চয় করুন ও উপার্জন বাড়ান
সন্তান নেয়া মানে একজন মানুষের বেড়ে যাওয়া। আর গর্ভকালীন সময়ে চিকিৎসকের খরচ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ওষুধ সহ আরো হাজারো খরচ যোগ হয়ে প্রতিমাসে। তাই গর্ভধারণের পরিকল্পনা করার আগে থেকেই দুজনে অর্থ সঞ্চয় শুরু করুন এবং চেষ্টা করুন উপার্জন কিছুটা হলেও বাড়াতে।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বন্ধ করুন
সন্তান নিতে চাইলে গর্ভরোধ করার বড়ি খাওয়া বন্ধ করে দিন। সাময়িক বন্ধাত্বের ইঞ্জেকশন নিয়ে থাকলে আবার গর্ভধারণের ব্যবস্থা করে নিন। কনডম ছাড়াই শারীরিক ভাবে মিলিত হন। গর্ভধারণের জন্য শারীরিক মিলনের সময়ে গর্ভধারণের বিশেষ সময়ের হিসাব রাখবেন। দুই মাসিকের মধ্যবর্তী ১০ দিন সময়টাই হলো গর্ভধারণের জন্য বিশেষ সময়। এই সময়ে গর্ভধারণের সম্ভাবনা সব চাইতে বেশি থাকে।
দুশ্চিন্তা করবেন না
গর্ভধারণের আগে দুশ্চিন্তা করবেন না। কারণ দুশ্চিন্তা করলে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পরে। সুস্থ সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য মা বাবা দুইজনেরই মানসিক অবস্থা ভালো হওয়া জরুরী। অন্যথায় গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে। তাই কোনো দুচিন্তা না করে চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। ইতিবাচক চিন্তা করুন এসময়ে। বিষন্নতায় ভুগলে সঙ্গীর সাথে দূরে কোথাও বেড়িয়ে এসে মন ভালো করে ফেলুন।
Tidak ada komentar: মা-বাবা হতে চাইলে মনে রাখুন ১০টি জরুরী বিষয়
Posting Komentar