সব মানুষেরই কি বন্ধু আছে? একেবারেই বন্ধু নেই যার সে যে সুখী নয় এটা কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। বন্ধুত্ব একটা আশীর্বাদ। এই আশীর্বাদ যার জীবনে আসে না তার জীবন একাকীত্ব আর মানসিক কষ্টে বিপর্যস্ত হয়ে যায়। তাহলে বন্ধুর ভূমিকা কি শুধুই একাকীত্ব দূর করা? বন্ধুরা একাকীত্ব দূর করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। আসুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক বন্ধুরা কিভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের উপকার করছে।
মানসিক চাপ কমায়-
আসে পাশে কয়েকজন বন্ধু থাকলে অনেক কঠিন বিষয়কেই সহজ মনে হয়। কোনো বিপদে- কষ্টে- সমস্যায় বন্ধুর সাথে আলোচনা করলেই মনের ভেতরের বোঝাটা যেন কোথায় হাওয়া হয়ে যায়। খুব কঠিন কোনো কাজও বন্ধুদের নিয়ে হেসে খেলে করে ফেলা যায়। যার ফলে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মানসিক চাপ থেকে সৃষ্ট নানান ধরণের অসুখ থেকে রেহাই মেলে।
ভালো স্বাস্থ্য অভ্যাস তৈরি করে-
কয়েকজন ভালো বন্ধু থাকলে ভালো অভ্যাস গঠনে সুবিধা হয়। যেমন- বন্ধুরা অতিরিক্ত মদ্যপান ত্যাগ করতে বলে, বন্ধু মোটা হয়ে গেলে তাকে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে ঠাট্টা তামাশা করে ব্যায়াম করতে বাধ্য করে ইত্যাদি।(বন্ধুরাই যদি মাদকাসক্ত হয়, তবে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে!)
অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে-
একটি গবেষনায় দেখা গেছে যে বন্ধু বৎসল মানুষের অসুখ বিসুখ কম হয়। অন্যদের তুলনায় যাদের বন্ধু বেশি তাদের সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি অসুখ হওয়ার প্রবণতা কম।
গভীর ঘুম
যাদের বন্ধু নেই তাদের ঘুম গভীর হয় না। নানান রকম অশান্তিতে তাদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো এর একটি গবেষণায় জানা গেছে যে যাদের বেশ কয়েকজন ভালো বন্ধু আছে তাদের ঘুম অন্যদের তুলনায় গভীর ও নিরবিচ্ছিন্ন হয়।
মস্তিষ্ক ভালো থাকে-
সুইডেনের একটি জরিপে জানা গেছে যে যারা সারা জীবন বন্ধুদের সাথে আনন্দ করে জীবন কাটিয়েছেন তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের তুলনায় বেশি ভালো থাকে। অনেক ছোট ছোট ব্যাপারও মনে রাখতে দেখা গেছে তাদেরকে। এমনকি তাদের উপস্থিত বুদ্ধিও বেশি থাকে অন্যদের তুলনায়।
আয়ু বাড়ায়-
অস্ট্রেলিয়ার কিছু গবেষক পুরো এক দশক ধরে বেশ কিছু বয়স্ক মানুষের উপর গবেষনা চালিয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যারা কম বয়সে এবং বেশি বয়সেও বন্ধুদের কাছে পেয়েছেন তারা অন্যদের তুলনায় বেশ কিছু বছর বেশি বাঁচেন। আর যারা ৫০ বছর বয়সের পরও একাকীত্বে ভোগেন তাদের জীবনকালের সাথে ধূমপায়ীদের তুলনা করে হয়েছে এই গবেষণায়।
আপনার বন্ধু আপনার সুখের ও বিপদের সঙ্গী। তাই জীবনের অন্য সব দিক কে অধিক প্রাধান্য দিতে গিয়ে প্রিয় বন্ধুটিকে অবহেলা করবেন না। সুস্থ থাকতে ও সুখী জীবন পেতে বন্ধুর তুলনা নেই।
Tidak ada komentar: বন্ধুত্বে সুস্বাস্থ্য!
Posting Komentar