কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সাথে ব্যক্তিত্বের সংঘাত যেমন নতুন কিছু নয়, তেমনি নতুন নয় বসের সাথে মতবিরোধও! একই কাজে নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অধঃস্তন কর্মচারীর মধ্যে চিন্তাভাবনার পার্থক্য, কাজের পদ্ধতি ফারাকের জন্য মতের অমিল থাকতেই পারে। কিন্তু এই মতের অমিল যখন বাড়তে বাড়তে সংঘাতের পর্যায়ে চলে যায় তখন আর সেটা স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে না। শুরু হয়ে যায় ঠান্ডা লড়াই! দেখা যায়, এক পর্যায়ে হয়তো অনেকেরই চাকরি চলে যায়। আবার এমনও হয় কেউ কেউ নিজেই চাকরি ছেড়ে চলে যান।
কাজ করার ক্ষেত্র দিন দিন বেড়ে চললেও সেখানে রয়েছে তুখোড় প্রতিযোগিতা। তাই ঝোঁকের মাথায় চাকরি ছেড়ে দেয়াটা বোকামির পর্যায়ে পড়ে। আবার এমন কোনো আচরণও করা উচিত হবে না যাতে চাকরি চলে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই কর্মক্ষেত্রে নিজের অবস্থান ধরে রাখাটা খুব জরুরি। আর তাই বসের সাথে মতবিরোধ দেখা দিলেও আচরণে একটু কৌশলী হলে ঠিকঠাক করে ফেলতে পারবেন সবই।
কী করবেন??
- অফিসে কাজ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে বসের সাথে মতবিরোধের সময় কাজ নিয়ে কোনো নেতিবাচক কথাবার্তা বলবেন না। কথার বিষয় যেন কাজের উন্নতি সংক্রান্তই হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
- বসের কোনো আইডিয়া পছন্দ না হলে তত্ক্ষণাত্ তাঁকে জানাবেন না। ভাবার জন্য সময় নিয়ে তারপর তাঁকে জানান। কেন বিরোধিতা করছেন তাঁকে বুঝিয়ে বলুন। আইডিয়ার নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরুন।
- মতবিরোধের সময় যতই মেজাজ খারাপ হোক না কেন, বসে সাথে উচ্চস্বরে কথা বলবেন না বা তর্ক করবেন না। উত্তেজিত না হয়ে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং ভদ্রভাবে কথার জবাব দিন।
- আপনার কথা যদি ঠিকও হয় তারপরেও সেটা জোর করে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন না। আলোচনার সময় বসকে অন্যদের মতামতও বিচার করতে দিন। এতে আপনার কথার মূল্যায়ন করতে তাঁর সুবিধা হবে। উপযুক্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ মনে করলে আপনার মতামতই তিনি গ্রহণ করবেন।
- বস নতুন কোনো প্রজেক্ট বা এক্সপেরিমেন্ট দিলে তা যদি আপনার মনঃপুত না হয় তাহলে সরাসরি তাঁকে বলুন। দায়িত্ব নেবার পর তা করতে না পারলে আপনিই সমস্যায় পড়বেন। তবে নতুন এক্সপেরিমেন্ট থেকে পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে থাকা কিন্তু এক প্রকার পিছিয়ে পড়াই!
- অফিসিয়াল মিটিংয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আপনার মনঃপুত না হলেও সরাসরি সেটার বিরোধিতা না করে মধ্যপন্থি হোন। কিছু কিছু ব্যাপারে একটু ছাড় দিন। এতে বসের সাথে তো বটেই সহকর্মীদের সাথেও সম্পর্ক ভালো থাকবে।
- বসের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটলেও তাঁর সম্পর্কে সহকর্মীদের কাছে অনুযোগ করবেন না। এটা কোনো না কোনোভাবে তাঁর কানে পৌঁছে যাবে। এতে অবস্থা আরো বিগড়ে যাবে।
- বসের ব্যক্তিগত কোনো দুর্বলতার কথা জানা থাকলেও সেটার সুযোগ নেয়া একেবারেই উচিত হবে না। মতবিরোধ বা ব্যক্তিত্বের সংঘাত থাকলেও এ ধরনের আচরণ কুরুচির পরিচয় দেবে।
- মতবিরোধ হলে বা আপনার মতামত গৃহীত না হলে সেটাকে ব্যক্তিগত পরাজয় হিসেবে ধরে নেবেন না। এতে আপনার কাছে কাজের ক্ষেত্র দিন দিন দুবির্ষহ হয়ে উঠবে।
- বসের পদমর্যাদার গুরুত্ব দিন। আপাতদৃষ্টিতে তাঁর দ্বারা ভুল হলেও তাঁকে হেয় করে বসবেন না।
Tidak ada komentar: মতবিরোধ যখন বসের সাথে
Posting Komentar