পৃথিবীর সব দেশেই উদযাপিত হয় মা দিবস তবে ভিন্ন ভিন্ন দিনে। তবে এমনিতে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত দিনটি হচ্ছে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার। আর সেই অনুযায়ী কাল ১২ই মে পালিত হচ্ছে মা দিবস। মা নিয়ে কথা বলতে গেলে বলে শেষ করা যাবেনা, মায়ের তুলনা শুধু মাকে দিয়েই হয়। আমাদের সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে ভালোবাসার, সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি হচ্ছেন মা। আর এই মা নিয়েই রইলো কিছু অজানা তথ্য-
- -১৯০৭ সালে মা দিবসের প্রয়োজনীয়তা প্রথম অনুভব করেন আনা জারভিস নামে একজন আমেরিকান মহিলা। আনা তাঁর মাকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। আনা বিয়ে করেননি বিধায় মা-ই তাঁর সবকিছু ছিল। ১৯০৫ সালে যখন আনার মা মারা গেলেন তখন আনা একেবারে নিঃসঙ্গ হয়ে গেলেন এবং তিনি অনুভব করলেন মা বেঁচে থাকতেই সবার উচিত মায়ের সঠিক মর্যাদা দেয়া আর এই লক্ষ্যেই আনা তাঁর মায়ের মৃত্যু দিনটিকে মা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নিরিন্তর কাজ করে যান।
- - আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উড্রো উইল্সন সর্বপ্রথম মা দিবসকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করেন। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেসে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা’ দিবস ঘোষণা করা হয়।
- - মাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রচলিতভাবে মা দিবসের উপহার হিসেবে সাদা কার্নেশন ফুল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়ে আসছে কারণ আনা জাভিয়ার্সের মায়ের পছন্দের ফুল ছিল এটি। তাই একে মা দিবসের প্রতীকও বলা হয়। তবে এখন সাদা ও লাল কার্নেশন ফুল দুটিই দেয়া হয় (লাল ফুল যাদের মা বেঁচে আছেন তাঁদের জন্য)।
- - মা আমাদের জন্মের পর থেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন, সবকিছুতে সব কাজেই মাকে চাই। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মা-ই সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত থাকেন।এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শিশু রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিবার পালনসহ একজন মা প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন।
- - মা সারাদিনে আমাদের কথা যতবার ভাবেন তা দুনিয়ার আর কেউ ভাবেন না বা চিন্তা করেন না। মা বলেই বোধহয় তা সম্ভব। এক গবেষণায় জানা গেছে যে, প্রতি চার মিনিটে মায়েরা একবার তার সন্তানের কথা ভাবেন। এই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ২১০ বার সন্তানের কথা চিন্তা করেন একজন মা।
- - এমনি থেকে হয়তো একবারও ফোন করে মায়ের খোঁজ নেয়া হয়না সারা বছর। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ফোন কল মা দিবসে করা হয় যারা বিদেশে থাকেন, মা দিবসে ফুল বা কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে ভুলে গেলেও, ফোন করতে ভোলেন না তারা। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য বিশেষ দিনগুলোর চেয়ে এ দিনটিতে সবচেয়ে বেশি ফোন কল হয়।
- - অনেক দেশে মাদারস ডে ‘মাদারিং সানডে’ নামেও পরিচিত।
- - বন্ধুবান্ধব বা কাছের মানুষদের বিভিন্ন উপলক্ষে কার্ড গিফট দেয় সবাই কিন্তু সব উপলক্ষে মাকে আর কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়না। তবে প্রতিবছর সারা পৃথিবীতে মা দিবসে প্রায় ১৫ কোটি ২০ লাখ কার্ড বিলি হয় মায়েদের কাছে।
- -ম ধ্বনিটি সবচেয়ে সহজ। হয়তবা এই কারণে পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষায় মা অর্থবোধক শব্দে ম অক্ষরটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। কারণ, মানুষ তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে সবচেয়ে সহজ ভাষায় ডাকতে পছন্দ করে।অধিকাংশ ভাষায়ই ‘মা’ শব্দের সমার্থক শব্দটি শুরু হয় ‘ম’ দিয়ে।
১- ইংরেজি ভাষায় বাংলা ‘মা’ এর শব্দ হল, মাদার। দেখা যাচ্ছে, ‘ম’ রয়েছে।
২- আরবী ভাষায় ‘মা’ এর শব্দ হল,‘উম্ম ‘ দেখা যাচ্ছে, ম আছে।
৩- উর্দু ভাষায় ‘মা’ এর শব্দ হল, ‘ মাঁ ’ এখানেও ম আছে।
৪- সংস্কৃত এবং হিন্দি ভাষায় ‘মা’ এর শব্দ হল, ‘ মাতা ’ ম আছে।
৫- রাশিয়ান ভাষায় বলা হয়, ‘মাতি ’ ম রয়েছে।
৬- গ্রীক ভাষায় বলা হয়, ‘মাতা’ ম আছে।
৭- হলেন্ডী ভাষায় বলা হয়, ‘মড্যের’ ম আছে।
৮- ফ্রান্সী ভাষায় বলা হয়, ‘ম্যারে’ ম আছে।
৯- জার্মানি ভাষায় বলা হয়, ‘মুতার’ ম আছে।
১০- ফার্সি ভাষায় বলা হয়, ‘ মাদার ’ ম আছে।
এছাড়া আমাদের সমাজে মাকে আরও বলা হয়, আম্মা , আম্মু,আম্মি বা মাম্মী । এখানেও দেখা যাচ্ছে ‘ম’ আছে।
- - ১৭ শতকের এক রাশিয়ান নারী আজকের দিনে জীবিত থাকলে মনে হয় সবচেয়ে বেশি মা দিবসের শুভেচ্ছা পেতেন, কারণ ৬৯ সন্তানের জননী ছিলেন তিনি! তাঁর সম্পর্কে শুধু এটুকুই জানা যায়, তিনি ছিলেন ফিওদর ভাসিলিয়েভ নামের একজন কৃষকের স্ত্রী। ৬৯ সন্তানের মধ্যে তিনি ১৬ জোড়া জমজ বাচ্চা জন্ম দিয়েছিলেন, ৭ জোড়া ত্রিমজ এবং ৪ জোড়া চারটা বাচ্চা করে একসাথে মোট ২৭ বারে জন্ম দিয়েছিলেন তিনি।
Tidak ada komentar: মা-কে নিয়ে ১০ টি অজানা তথ্য
Posting Komentar