বর্তমান সমাজে যৌথ পরিবারগুলো ভেঙ্গে একক পরিবার হয়ে যাচ্ছে। ভাই বোনের সংখ্যাও কমে গেছে আগের তুলনায়। বেশিরভাগ পরিবারই একজন বা দুইজন সন্তান আর বাবা মা নিয়ে গঠিত। ফলে মানুষের মধ্যে একাকীত্ব ভর করে বসেছে এবং মানুষ দিন দিন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। আর এর এই আত্মকেন্দ্রিকতার প্রভাব পড়ছে সংসার জীবনেও। সবার মধ্যে মানিয়ে চলার ক্ষমতা ও সহনশীলতা কমে যাচ্ছে। ফলে দাম্পত্য অশান্তি ও বিচ্ছেদের হারও বেড়ে যাচ্ছে দিন দিন।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ভাই বোনের সংখ্যা যত বেশি বিবাহ বিচ্ছেদের ঝুঁকি তত কম।
ভাই বোনের সংখ্যা নূন্যতম এক থেকে সাত জন বা তারও বেশি হলে বিবাহ বিচ্ছেদের ঝুঁকি প্রায় ২% কমে যায়। তথ্যটি ১৯৭২ থেকে ২০১২ এর মধ্যে ৫৭০০০ মানুষের উপর করা একটি গবেষণা থেকে পাওয়া গেছে।
নিউইয়র্ক শহরের আমেরিকান সোশালজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশান এর মতে ৭ জন বা তার বেশি ভাই বোন থাকা মানে এই নয় যে তাঁরা বিবাহিত সম্পর্কে নিরাপত্তা প্রদান করছে বা জোরপূর্বক সম্পর্ক রক্ষা করতে বাধ্য করছে।
গবেষণাটির একজন সহ লেখক এবং সাইকোলজির অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ডোন্না বব্বিট-জেহের এর মতে যাদের বেশি ভাই বোন আছে তাঁরা অনেক মানুষের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখতে অভ্যস্ত এবং মানিয়ে চলার ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় বেশি থাকে। তাই এই গুণ গুলো বিবাহিত জীবনে কাজে লাগে এবং মনোমালিন্য কম হয়। তাই বিচ্ছেদের ঝুঁকিও কমে।
গবেষণায় ভাই বোনের সংখ্যার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের সম্পর্ক পাওয়া গেছে। গবেষণাটিতে বেশি ভাই বোন থাকার আরো কিছু উপকারিতার কথা উল্ল্যেখ করা হয়েছে।
গবেষণাটির একজন সহ লেখক ও সমাজ বিজ্ঞানের প্রফেসর ডৌগ ডওনিরর মতে, কয়েকজন ভাই বোনের মাঝে বেড়ে উঠলে ইতিবাচক ও নেতিবাচক পরিস্থিতি সামলে নেয়ার দক্ষতা গড়ে ওঠে। এধরনের পরিবারে বেড়ে উঠলে অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ার অভ্যাস হয় এবং কোনো সমস্যার সময় কিভাবে কথা বলতে হয় তার অভ্যাস হয়ে যায়। যত বেশি ভাই বোন তত এসবে দক্ষতা বেশি থাকে। তাই ভবিষ্যত বিবাহিত সম্পর্কের সাথে মানিয়ে নেয়ার প্রাথমিক প্রশিক্ষণ হয়ে যায়। ফলে দাম্পত্য জীবনে সমস্যা কম হয় এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ঝুঁকি কমে যায়।
ফটো ক্রেডিট- বিচ্ছু বাহিনী
Tidak ada komentar: ভাই-বোন বেশি থাকলে ডিভোর্সের ঝুঁকি কমে
Posting Komentar