প্রত্যেকটি মানুষ একে অপর থেকে ভিন্ন হয়। অনেক সময় এই ভিন্নতা অনেক ভাল সম্পর্ককেই ভেঙ্গে ফেলতে পারে। নারী বা পুরুষ এক রকম করে ভাববে বা একই রকম হবে এটা ভাবাটা ঠিক হবে না। একটি পুরুষ একটি নারীর থেকে ভিন্ন হবে এইটাই স্বাভাবিক। এই ভিন্নতাই অনেক সময় তাদের সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। কিন্তু একটি সম্পর্ক মাঝে অবস্থান করে একজন যদি আরেকজনের থেকে বেশি অন্যরকম হন বা তারা তাদের সম্পর্ক থেকে সম্পূর্ণ দুই রকম জিনিষ চান তবে সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরাটাই স্বাভাবিক হবে। তাই একে অপরকে কিছুটা হলেও বুঝে চলার চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে।
সাধারণত সম্পর্কের ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে যে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় মানসিকভাবে যুক্ত থাকে বেশি। তাই যেকোনো পুরুষকে তার সঙ্গিনীকে মানসিকভাবে বুঝতে চেষ্টা করতে হবে। আবার মেয়েদের বোঝানো হয় যে আপনার স্বামী বা প্রেমিকের জন্য তাকেই ছাড় দিতে হবে বেশি। ঠিক মত না বুঝলে এসব কিছু যে কোন সম্পর্ককে ঠিক করার বদলে জটিল করে তুলবে বেশি করে। মেয়েরা স্বভাবতই আশা করে তার প্রেমিক পুরুষটি বা স্বামীটি তাকে মানসিক ভাবে সহায়তা করবে সম্পর্ক ঠিক রাখতে। কিন্তু আমরা ভেবে দেখেছি কি যে আমাদের সঙ্গী পুরুষটি কি চান? বা আপনি যেভাবে চাচ্ছেন তিনি তা বুঝতে পারছেন কি না? অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যাপারটি সম্পূর্ণ আড়ালেই পড়ে থাকে। আসুন জেনে নেই আপনার সঙ্গীটি কি চান আপনার কাছ থেকে।
ছেলেরা কখনই "মাইন্ড রিডার" নন। অর্থাৎ তারা আপনার মনের কথা বুঝতে সক্ষম নন। আপনি কোন কথা বুঝানোর জন্য যতই তাকে সুত্র দিয়ে যান না কেন তার কোনটাই কাজ করবেনা যদি না সে জিনিসটি বুঝতে সক্ষম হয়। অনেক সময় বার বার ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলার পরেও যখন আপনার সঙ্গীটি আপনার কথা বুঝতে ব্যর্থ হবেন তখন তার উপরে আপনার রাগ করাটাই স্বাভাবিক বলে আপনার কাছে মনে হলেও তার কাছে হয়ত মনে হতে পারে যে আপনি পাগলামো করছেন। সত্যি বলতে বেশির ভাগ পুরুষ ছোট ছোট খোঁচাখুঁচি বা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলা পছন্দ করেননা, কারণ তারা এর বেশিরভাগই বুঝতে পারেনা। আপনার যদি কোন সমস্যা থাকে তবে তাকে সরাসরি বলুন। সেও এইটাই চাইবে আপনার আছে। আপনাদের সম্পর্কে যদি সমস্যা থাকে এবং এর সমাধান আপনি জেনে থাকেন তবে তার সাথে সরাসরি কথা বলুন। সে আপনার কাছে থেকে সরাসরি শুনতেই বেশি পছন্দ করবে। দেখা গেছে যে বেশিরভাগ পুরুষই এরকম ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গিনির সাথে মিলে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে কাজ করে থাকে। সরাসরি কথা না বলে তাকে খোঁচাখোঁচি করলে সে বরং আরও বেশি বিরক্তবোধ করবে।
আপনার সঙ্গীকে বিশ্বাস করতে শিখুন। সে মনে প্রানে চায় যে আপনি তাকে বিশ্বাস করবেন। আপনি যদি তাকে বিশ্বাস করতে পারেন তবে সেও সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখার চেষ্টা অবশ্যই করবে। তবে তাকে বোঝাতে ভুলবেন না যে আপনি তাকে বিশ্বাস করেন। "সব ছেলেরাই বিশ্বাসঘাতক" এই কথাটি ঠিক হয়। হয়ত আপনার স্বপ্নে দেখা রাজকুমার বাস্তবে নেই তবে ভাল ছেলেরা অবশ্যই আছে। এবং সব ছেলেরাই বিশ্বাসঘাতকতা করবে এমনটি ভেবে রাখা ঠিক নয়। আপনাকে সময় দেয়া যেমন তার কর্তব্য এবং আপনি যেমন চান সে এই কর্তব্য পালন করুক, সেও কিন্তু নিজের জন্য একটু সময় বের করতে চায়বে। এবং এইটা সে পাওয়ার যোগ্যও। তাই কখনো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চাইলে তাকে যেতে দিন। চাইলে এই সময়ে আপনি আপনার বন্ধুদের নিয়ে সময় কাটিয়ে আসতে পারেন।
আবার অনেক সময় আপনার প্রেমিক বা স্বামীটি আপনাকে তার মেইল এর ইনবক্স বা টেক্সট ম্যাসেজ পড়তে দিতে নাও চাইতে পারেন। এর মানে এই না যে তিনি আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। হয়ত অফিশিয়াল কোন ব্যাপার আছে, অথবা আপনার স্বামী বা প্রেমিক সব কিছু শেয়ার করাটা পছন্দ নাও করতে পারেন। মনে রাখবেন আপনার বান্ধবীর প্রেমিক বা স্বামীটি যদি এসব এলাও করে করতে দিন, এর মানে এইনা যে আপনার স্বামীকেও করতে হবে। সবাই এক রকম হয় না। তাই বলে অযথা অবিশ্বাস করতে যাবেন না। মনে রাখবেন বিশ্বাস হল একটি দুইমুখি রাস্তা। আপনি বিশ্বাস করলেই সেও আপনাকে বিশ্বাস করবে ও আপনার বিশ্বাসের মর্যাদা দিবে।
কিছুদিন আগেও এমনটা বলা হত যে বউ সুন্দর হয়ে সেজে না থাকলে স্বামীকে ঘরে বেঁধে রাখা যায় না। আসলে এটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। বেশিরভাগ পুরুষই কিন্তু আপনার সাজ পোশাকের দিকে নজর দিবে না। আপনি মোটা হয়ে যাচ্ছেন না আপনার মুখে দাগ হয়ে গেল এসব সে ততক্ষণ খেয়াল করবে না যতক্ষণে আপনি তাকে দেখতে না বলছেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে একটি ছেলে একটি মেয়ের মধ্যে শারীরিক সৌন্দর্যের চেয়ে তার নিজের প্রতি আস্থাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। শারীরিক সৌন্দর্য তাদের জন্য একটি জরুরি ব্যাপার হলেও এক সাথে থাকতে গেলে তারা তাদের সঙ্গিনীর নিজের প্রতি আস্থা, ও আত্মসম্মানবোধকেও প্রাধান্য দিয়ে থাকে নৈরাশ্যবাদী নারীদের তুলনায় যা তারা হয়ত আপনাকে কখনই বলবে না। তাই সে আপনাকে সুন্দর বলল না কেন বা আপনি অসুন্দর হয়ে গেলে সে আপনাকে ভুলে যাবে এইসব চিন্তা ঝেরে ফেলুন। এমন কিছুই হবে না। নিজেকে তাদের সামনে শুধু সুন্দরী করে নয় বরং সৌন্দর্যের পাশাপাশি আশাবাদি, আস্থাশীল ও আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন নারী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করুন। দেখবেন সে আপনাকে আপনার জন্যই ভালবাসছে।
সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গীকে বুঝে চলার চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে একটি সুন্দর সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য, তবে এর মানে এই নয় যে আপনি একাই সব করে যাবেন। এটা কখনই ঠিক নয়। তাকে যেমন বুঝে চলার চেষ্টা আপনি করবেন তেমন তাকেও বুঝে চলতে হবে। সে না বুঝলে তাকে তা বুঝিয়ে বলুন। কোন সমস্যা থাকলে দুইজনে এক সাথে বসে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করুন। ইনিয়ে বিনিয়ে নয় স্পষ্ট করে তাকে বলুন কোথায় তাকে হাল ধরতে হবে এবং কেন। দুই জনে মিলেমিশে চলতে পারলেই একটি সুন্দর সম্পর্ক রচিত হবে।
Tidak ada komentar: জেনে রাখুন প্রিয় পুরুষের মনের খবর
Posting Komentar