সব বাচ্চাই মা-বাবার সান্নিধ্য চায়। মা-বাবারাও চান সন্তানের সাথে সময় কাটাতে। কিন্তু সব সময় সেটা হয়ে ওঠে না। বিশেষ কর্মজীবিদের ক্ষেত্রে। অথচ সন্তানের সাথে বন্ধন দৃঢ় করতে একসাথে সময় কাটানো খুবই জরুরি। তাই আপনি আপনার সন্তানের সাথে যতটুকু সময়ই কাটান না কেন, তা যেন হয় আপনাদের দুজনার মধ্যকার সেতুবন্ধন। দিনের যেটুকু সময় সন্তানকে দিতে পারবেন, তা যেন হয় হাসি ও আনন্দে উজ্জ্বল। এ ব্যাপারে রইল কিছু পরামর্শ -
- পরিবারের সবার সুবিধার কথা মাথায় রেখে দিনের যেকোনো এক বেলার খাবার বাচ্চাদের সাথে অবশ্যই খান। যাঁরা খুব ভোরে কাজে চলে যান তাঁরা রাতে এবং যাঁরা বেশি দেরি করে বাসায় ফেরেন তাঁরা সকালের সময়টা বেছে নিতে পারেন। সারা দিনের বা পরের দিনের পরিকল্পনা, স্কুলের গল্প ইত্যাদি শুনুন ওদের কাছ থেকে। মন দিয়ে শুনবেন এবং মাঝে মাঝে প্রশ্ন করুন। এতে বাচ্চাদের আগ্রহ বাড়বে।
- বাচ্চাদের হবি বা শখের দিকে নজর রাখুন। সম্ভব হলে তাকে হবি ক্লাসে ভর্তি করিয়ে দিন। নিয়মিত খোঁজখবর রাখুন। বাচ্চার সাথে আপনার মানসিক দূরত্ব কমে আসবে।
- বাড়ির কিছু কাজ সন্তানদের সাথে নিয়ে করুন। যেমন সকালে নাশতা বানালেন আপনি, মেয়েকে বলুন টেবিল গোছাতে, ছেলকে বলুন চা ছেঁকে কাপে ঢালতে।
- ছুটির দিনে ছেলেমেয়েকে সাথে নিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন, গোছান। শপিং লিস্ট বানানো, আলমারি গোছানোর মতো কাজে ওদের সাহায্য নিন। এতে কাজটা তো তাড়াতাড়ি হয়ে যাবেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে ওদের সাথে গল্প করতে পারেন বা জরুরি কথাবার্তা বলতে পারেন।
- সকাল-সন্ধ্যা 'পড়া পড়া' করে বাচ্চাকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলবেন না। খুঁটিয়ে দেখুন কোন সাবজেক্ট ওর ভালো লাগে না। সম্ভব হলে বিষয়টি ওর কাছে ইন্টারেস্টিং করে তোলার চেষ্টা করুন। প্রত্যেকটা চ্যাপটার শেষ হলে ক্যুইজ কনটেস্ট করতে পারেন। নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দিলে একটা প্রাইজ দিন। দেখবেন, অপছন্দের বিষয়ে সে আগ্রহ পেতে শুরু করেছে। রোজ সময় দিতে না পারলেও বাচ্চার পড়াশোনার ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখুন।
- বাচ্চার সাথে সময় কাটানোর কিছু মজার নিয়ম চালু করুন। যেমন রাতে শোয়ার আগে দশ মিনিট পিলো ফাইট করা। এতে বিছানা, বালিশ লণ্ডভণ্ড হলেও বাচ্চার মুখের হাসিটা হবে অমূল্য!
- কাজের চাপের জন্য যদি খুব বেশি ব্যস্ত থাকেন তাহলে মাসে একদিন ছুটি নিয়ে পুরোটা দিন বাচ্চার সঙ্গে কাটান। ঘুরে বেরিয়ে, খেলাধুলা করে বা শুধুই আড্ডা দিয়ে দিনটা আনন্দে ভরপুর করে তুলুন। যাতে আপনার বাচ্চা এই দিনটির জন্যেই অপেক্ষা করে থাকে।
- বাচ্চাকে যদি সময় দিতে না পারেন তাহলে শুধু উপহার দিয়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলা খুবই অনুচিত। প্রয়োজনে কিছু কাজ বাদ দিয়ে হলেও সন্তানকে সময় দিন। মাসে একদিন বেড়ানো, সপ্তাহে একদিন আইসক্রিম খাওয়া - এই ছোট ছোট বিষয়গুলোই আপনাকে সন্তানের অনেকটাই কাছে এনে দেবে।
Tidak ada komentar: সময় দিন সন্তানকে
Posting Komentar