আমরা প্রত্যেকেই চাই জীবনকে পরিশ্রম ও কাজের মাধ্যমে সুন্দর করে তুলতে। কিন্তু মাঝে মাঝে অনিচ্ছাকৃত ভাবে আর নিজের অজান্তেই প্রতিনিয়ত আমরা কিছু ভুল আচরণ বা কাজ করি বা ক্ষতিকর কিছু মানসিক প্রবণতা নিজের ভেতরে লালন করে থাকি। নারীদের এমন কিছু প্রবণতা যা দৈনন্দিন জীবনকে করে তোলে অসুখী আর যা থেকে উঠে আসা তেমন কঠিন কিছু নয়, এ বিষয়টি নিয়েই রইল কিছু টিপসঃ
নিজের সমস্যাজনক দিকগুলো করে ফেলুন ঠিক ঠাক আর দেখুন কি প্রশান্তিময় এক ভোর অপেক্ষা করছে আপনারই জন্যে!
১) অন্যদের সাথে তুলনাঃ
অন্যের সাথে, বিশেষত নিজের বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী বা চারপাশের মানুষের জীবনের সাথে নিজের জীবনের তুলনা করাটা বিশাল বোকামী।আপনি জানেন কী? এভাবে আপনি কেবল অস্থিরতা আর হতাশায়ই ভুগবেন।আপনার চেনা আরেকজন নারী হয়তো একজন ধনী স্বামী পেয়েছেন কিন্তু আপনি পেয়েছেন অত্যন্ত ভালো একজন মানুষকে। কেন অযথা আফসোস করে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি ডেকে আনবেন?২) একা থাকার ভয়ঃ
দূর্ভাগ্যজনকভাবে বেশিরভাগ নারীই দ্রুত কোন সম্পর্কে জড়ান এবং সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করেন জীবনকে বা সম্পর্কটিকে উপভোগ করার জন্যে নয় বরং তারা একা হয়ে যাবেন এই ভয়ে। দেখা যায় কোন ব্রেক আপের পরে নারীরা যত জলদি সম্ভব নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন যদিও তারা জানেন সেই মানুষটি তার যোগ্য নন। এটি ঠিক নয়, জীবন কখনোই একার নয় বরং মা বাবা, বন্ধু, সহকর্মী সবাইকে নিয়েই আপনি সুখে থাকতে পারেন, সম্পর্কে জড়াবার আগে যৌক্তিক ভাবে চিন্তা করুন। নয়তো পরে পস্তাতে হবে।৩) সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টাঃ
সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টায় নারীরা নিজের জীবনকেই বঞ্চিত করেন। ‘না’ বলতে শিখুন। নিজের কাজগুলোকে, নিজের জীবনকে ও আনন্দকে গুরুত্ব দিন। আপনি ‘না’ বললেই যে মানুষ আপনাকে অপছন্দ করা শুরু করবে তা কিন্তু নয়। যৌক্তিক আর আন্তরিক ভাবে বুঝিয়ে বললে মানুষ বুঝবে না কেন!প্রথমে নিজে খুশি থাকুন তারপরে অন্যের কথা ভাবুন।৪) ছুটি না নেয়াঃ
হ্যাঁ, আপনি কাজ ভালোবাসেন, ভালোবাসেন পরিবারের সবার যত্ন নিতেও। কিন্তু এভাবে আপনি নিজেকে সময় দিচ্ছেন না। এভাবে আপনি নিজের শরীরকে ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। মাঝে মাঝে ব্রেক নিন। ছুটি কাটান সমুদ্র বা পাহাড়ের কাছে। সংকীর্ণতা কেটে গিয়ে মন হবে উদার।৫) জীবনের সবকিছুর ডেডলাইন ঠিক করে রাখাঃ
প্রতিদিন যেসব কাজ করবেন সেগুলোর ডেডলাইন থাকতেই পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে জীবনে সব কিছুই আপনার প্ল্যান মত নির্দিষ্ট সময়েই ঘটবে। মাঝে মাঝে ডেডলাইন ক্রস হতেই পারে, হয়ত তার জন্যে আপনি দায়ী নন। যেমন ২৫-২৬ বছরের মাঝে বিয়ে আর ৩০ বছরের ভেতর প্রথম সন্তান নেয়ার প্ল্যান আপনার থাকতেই পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কোন কারনে তা না হলে জীবন এখানেই শেষ। বরং নতুন করে প্ল্যান করুন আবারো। গুছিয়ে নিন। হতাশ হবেন না।৬) অন্য নারীদের যৌন বা দাম্পত্য জীবন নিয়ে ঈর্ষাঃ
পরিচিত বা অপরিচিত নারীদের যৌন বা দাম্পত্য জীবন নিয়ে ঈর্ষান্বিত হতে দেখা যায় অনেক নারীকেই। এই ঈর্ষা এক অসম্ভব আকাংক্ষার জন্ম দেয় যা তার নিজের বা জীবনসঙ্গীর পক্ষে পূরণ করা কঠিন হয়ে পরে। মনে রাখুন প্রত্যেকের দাম্পত্য জীবনের একটি নিজস্ব সুর আছে। অন্য কারো সুরে সেটাকে বাজানোর চেষ্টা করবেন না। এতে দাম্পত্যে কেবল অশান্তিই হবে।৭) প্রতিদিন হাইহিল পরার অভ্যাসঃ
উচ্চতা নিয়ে হীনম্মণ্যতায় ভোগেন অনেক নারীই। তাই প্রতিদিন হাইহিল পরার অভ্যাস গড়ে ওঠে। কিন্তু এতে আপনাকে সাময়িকভাবে আকর্ষনীয় দেখা গেলেও এটি একটু একটু করে ক্ষয় করে ফেলে আপনার মেরুদন্ডের হাড়। ফলে আপনি অকালে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন।৮) নিজেকে সুখী প্রমাণ করার চেষ্টাঃ
নিজেকে অন্যদের সামনে সুখী প্রমাণ করার চেষ্টা দেখা যায় অনেক নারীর মাঝেই। এজন্যে তাঁরা নানা ধরনের মিথ্যে কথা আশ্রয় নিতেও দ্বিধা করেন না। যেমন নিজের ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দাম, স্বামী বা সন্তানের সাফল্য, যৌনজীবন নিয়ে বাড়িয়ে বলা। এ ধরনের আচরণ দ্বারা এক ধরনের সাময়িক আত্মতৃপ্তি পাওয়া গেলেও দিনশেষে তা মিথ্যে বলেই সবার সামনে প্রমাণিত হয়। তাই এই অভ্যাস ত্যাগ করা প্রয়োজন।৯) নিন্দা করার অভ্যাসঃ
অনেকের মাঝেই অপরের নামে খারাপ কথা বলার প্রবণতা থাকে। হোক তা সত্যি বা মিথ্যা। এই নিন্দা করার ফলে আপনি যাদের নিন্দা করছেন তাদের সম্পর্কে মানুষের খারাপ ধারণা হবার পাশাপাশি আপনাকেও কিন্তু মানুষ নিন্দুক বলেই চিনবে। আর তাছাড়া যার নামে খারাপ কথা বলছেন তার কানে কথাগুলো গেলে তিনিও মনে কষ্ট পাবেন। এ অভ্যাসটি ত্যাগ করে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলুন।এতে আপনার শত্রুর চেয়ে বন্ধুর সংখ্যাই বাড়বে।বিপদের সময় পাশে পাবেন অনেককেই!নিজের সমস্যাজনক দিকগুলো করে ফেলুন ঠিক ঠাক আর দেখুন কি প্রশান্তিময় এক ভোর অপেক্ষা করছে আপনারই জন্যে!
Tidak ada komentar: নারীদের যে ৯ টি প্রবণতা ত্যাগ করা প্রয়োজন এখনই!
Posting Komentar