নারীর অধিকার নিয়ে বিভিন্ন কথা লিখেছেন তসলিমা নাসরিন। নারীর শরীর পুরুষ লেখক-কবিদের দৃষ্টিভঙ্গি কিংবা সমাজে একজন নারীর বিভিন্ন সময়ের অবস্থান কোথায়, তাও খোলাসাভাবে আলোচনা করেছেন তিনি। তসলিমা নাসরিনের এ সংক্রান্ত একটি লেখা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। পাঠকদের সুবিধার্থে লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
নারী শরীর নিয়ে এতকাল পুরুষেরা লিখেছেন, এঁকেছেন, গড়েছেন তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে। নারীর অধিকার ছিল না নারীর শরীর নিয়ে লেখার। মন নিয়ে লিখতে পারে, কিন্তু শরীর নিয়ে নয়। কিন্তু নারী-লেখক-কবিরা এখন পুরুষের তৈরি করা গণ্ডি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছেন। তারা তাদের শরীর নিয়ে তাদের মতো করে লিখেছেন। নারী শরীর যে পুরুষের সম্পত্তি নয়, অথবা পুরুষ-লেখক-কবিরা যদি অনুধাবন করতে পারেন, তবে সাহিত্য জগতে খুব বড় একটি পরিবর্তন দেখা দেবে।
বাঙালি সমাজ কুৎসিত পুরুষতন্ত্র দ্বারা এখনও আক্রান্ত, কিন্তু বাংলা সাহিত্য পুরুষতান্ত্রিক নিয়মনীতিগুলো ভাঙ্গার চেষ্টা সামান্য হলেও চলছে, সম্ভবত বাঙালি নারী-লেখক-কবিদের অনেকেই সুশিক্ষিত এবং স্বনির্ভর এবং নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন বলেই। কিন্তু সমাজে এখনও নারী অসহায়, এখনও নারী পণ্য, ভোগ্যপণ্য, যৌনসামগ্রী হিসেবেই চিহ্নিত। নারী সর্বচ্চ বিদ্যাপিঠে পড়ছে, কিন্তু সত্যিকার শিক্ষিত হচ্ছে না। নারী উপার্জন করেছে, কিন্তু পুরুষের ওপর নির্ভরশীলই থেকে যাচ্ছে। বেশির ভাগ নারীই পুরুষতন্ত্রের ধারক এবং বাহক। বেশির ভাগ নারীই জানে না যে তারা নির্যাতিত। বেশিরভাগ নারীই ভয় পায় বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেতে। নারীর জন্য এই অসহায় অবস্থাটি সৃষ্টি করেছে এই পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা। নারী এই সমাজে পুরুষের দাসী। খালি চোখে দাসীকে দাসী বলে মনে হয় না যদিও সম্পর্কের গভীরে গেলেই বোঝা যায় যে দাসী। নারী যখন প্রেমিকা, সে দাসী। নারী যখন স্ত্রী, তখনও সে দাসী। উন্নতমানের দাসী। পুরুষ প্রেমিক বা স্বামীর আদেশ নির্দেশ মেনে চলতে হয় তাকে। পুরুষ যেভাবে চায়, নারীর সেভাবে নিজেকে গড়তে হয়। সাজসজ্জা, আচার ব্যাবহার, দোষগুণ সবকিছু ধারনাই পুরুষের তৈরি করা। প্রেম ভালবাসা পুরুষের জন্য তরবারি, নারীকে দুর্বল করার। প্রভু এবং দাসীতে প্রেম হয় না। পন্যের সঙ্গে আর যাই হোক, প্রেম হতে পারে না।
নারী নিজের যৌন ইচ্ছের কথা প্রকাশ করলে তাকে ছিঃ ছিঃ করে সমাজের সকলে। নারীর যৌন কামনা থাকতে নেই, থাকলে সে নির্লজ্জ, সে নষ্ট, সে বেশ্যা। নারী তার শরীর সাজাবে পুরুষের জন্য, নিজের জন্য নয়। নারী বেঁচে থাকবে পুরুষের জন্য। এরকমই তো নিয়ম। ক’জন নারী জানে সঙ্গমে শীর্ষসুখ বলে একটি ব্যাপার আছে! খুব কম নারীই জানে! বেশির ভাগই মনে করে যৌনতা পুরুষের জিনিস। শরীর নারীর, কিন্তু এতে অধিকার পুরুষের। নারী এক হাত থেকে আরেক হাতে সমর্পিত হয় সারাজীবনই! তার মালিক বদলায়। পিতা থেকে প্রেমিক, প্রেমিক থেকে স্বামীতে, স্বামী থেকে পুত্রতে। নারীর জীবন তো নারীর নয়। বিভিন্ন সম্পর্কের পুরুষের কাছে নারী বাঁধা, শৃঙ্খলিত। এই যখন অবস্থা আমাদের সমাজের, তখন নারী-লেখক-কবিরা যখন শরীরের ওপর নিজের অধিকারের কথা লেখেন, স্বাধীনতার কথা লেখেন, তা হয়ত সমাজের সত্যিকারের রূপকে তুলে ধরে না, কিন্তু এক ধরনের বিপ্লব, সেটি ছোটখাটো হলেও, কাগজে কলমে হলেও, ঘটায়।
নারী শরীর নিয়ে এতকাল পুরুষেরা লিখেছেন, এঁকেছেন, গড়েছেন তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে। নারীর অধিকার ছিল না নারীর শরীর নিয়ে লেখার। মন নিয়ে লিখতে পারে, কিন্তু শরীর নিয়ে নয়। কিন্তু নারী-লেখক-কবিরা এখন পুরুষের তৈরি করা গণ্ডি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছেন। তারা তাদের শরীর নিয়ে তাদের মতো করে লিখেছেন। নারী শরীর যে পুরুষের সম্পত্তি নয়, অথবা পুরুষ-লেখক-কবিরা যদি অনুধাবন করতে পারেন, তবে সাহিত্য জগতে খুব বড় একটি পরিবর্তন দেখা দেবে।
বাঙালি সমাজ কুৎসিত পুরুষতন্ত্র দ্বারা এখনও আক্রান্ত, কিন্তু বাংলা সাহিত্য পুরুষতান্ত্রিক নিয়মনীতিগুলো ভাঙ্গার চেষ্টা সামান্য হলেও চলছে, সম্ভবত বাঙালি নারী-লেখক-কবিদের অনেকেই সুশিক্ষিত এবং স্বনির্ভর এবং নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন বলেই। কিন্তু সমাজে এখনও নারী অসহায়, এখনও নারী পণ্য, ভোগ্যপণ্য, যৌনসামগ্রী হিসেবেই চিহ্নিত। নারী সর্বচ্চ বিদ্যাপিঠে পড়ছে, কিন্তু সত্যিকার শিক্ষিত হচ্ছে না। নারী উপার্জন করেছে, কিন্তু পুরুষের ওপর নির্ভরশীলই থেকে যাচ্ছে। বেশির ভাগ নারীই পুরুষতন্ত্রের ধারক এবং বাহক। বেশির ভাগ নারীই জানে না যে তারা নির্যাতিত। বেশিরভাগ নারীই ভয় পায় বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেতে। নারীর জন্য এই অসহায় অবস্থাটি সৃষ্টি করেছে এই পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা। নারী এই সমাজে পুরুষের দাসী। খালি চোখে দাসীকে দাসী বলে মনে হয় না যদিও সম্পর্কের গভীরে গেলেই বোঝা যায় যে দাসী। নারী যখন প্রেমিকা, সে দাসী। নারী যখন স্ত্রী, তখনও সে দাসী। উন্নতমানের দাসী। পুরুষ প্রেমিক বা স্বামীর আদেশ নির্দেশ মেনে চলতে হয় তাকে। পুরুষ যেভাবে চায়, নারীর সেভাবে নিজেকে গড়তে হয়। সাজসজ্জা, আচার ব্যাবহার, দোষগুণ সবকিছু ধারনাই পুরুষের তৈরি করা। প্রেম ভালবাসা পুরুষের জন্য তরবারি, নারীকে দুর্বল করার। প্রভু এবং দাসীতে প্রেম হয় না। পন্যের সঙ্গে আর যাই হোক, প্রেম হতে পারে না।
নারী নিজের যৌন ইচ্ছের কথা প্রকাশ করলে তাকে ছিঃ ছিঃ করে সমাজের সকলে। নারীর যৌন কামনা থাকতে নেই, থাকলে সে নির্লজ্জ, সে নষ্ট, সে বেশ্যা। নারী তার শরীর সাজাবে পুরুষের জন্য, নিজের জন্য নয়। নারী বেঁচে থাকবে পুরুষের জন্য। এরকমই তো নিয়ম। ক’জন নারী জানে সঙ্গমে শীর্ষসুখ বলে একটি ব্যাপার আছে! খুব কম নারীই জানে! বেশির ভাগই মনে করে যৌনতা পুরুষের জিনিস। শরীর নারীর, কিন্তু এতে অধিকার পুরুষের। নারী এক হাত থেকে আরেক হাতে সমর্পিত হয় সারাজীবনই! তার মালিক বদলায়। পিতা থেকে প্রেমিক, প্রেমিক থেকে স্বামীতে, স্বামী থেকে পুত্রতে। নারীর জীবন তো নারীর নয়। বিভিন্ন সম্পর্কের পুরুষের কাছে নারী বাঁধা, শৃঙ্খলিত। এই যখন অবস্থা আমাদের সমাজের, তখন নারী-লেখক-কবিরা যখন শরীরের ওপর নিজের অধিকারের কথা লেখেন, স্বাধীনতার কথা লেখেন, তা হয়ত সমাজের সত্যিকারের রূপকে তুলে ধরে না, কিন্তু এক ধরনের বিপ্লব, সেটি ছোটখাটো হলেও, কাগজে কলমে হলেও, ঘটায়।
Tidak ada komentar: নারীর যৌন কামনা থাকলে সে হয় নির্লজ্জ-নষ্ট-বেশ্যা : তসলিমা নাসরিন
Posting Komentar